বন্যা বিধ্বস্ত আসামে গত দু’দিন বৃষ্টিপাতের পরিমাণ অনেকটা কমেছে। তবে রবিবার আরও তিনজনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। এই নিয়ে মোট ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখনও বহু মানুষ নিখোঁজ রয়েছে বলে খবর মিলেছে। আসাম রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (ASDMA) অনুসারে, আসামের ১৪ টি জেলা জুড়ে মোট ৫ লক্ষ ৩৫ হাজার ২৪৬ জন বিপাকে পড়েছেন বন্যার ফলে।
এএসডিএমএ অনুসারে, ১৪টি বন্যা ক্ষতিগ্রস্ত জেলা হল হাইলাকান্দি, করিমগঞ্জ, হোজাই, ধেমাজি, কামরুপ, ডিব্রুগড়, নগাঁও, মরিগাঁও, কাছাড়, দক্ষিণ সালমারা, কার্বি আংলং পশ্চিম, গোলাঘাট এবং ডিমা-হাসাও।
নগাঁওতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। যেখানে ৩ লক্ষেরও বেশি মানুষের জনজীবন ব্যাহত হয়েছে এবং সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির সংখ্যা এক লক্ষেরও বেশি। রবিবার যে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে তাঁদের মধ্যে দুজন কাছাড়ের এবং একজন নগাঁওয়ের বাসিন্দা বলে জানা গেছে। কোপিলি, বরাক, কুশিয়ারা - এই তিনটি নদী বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে এখনও।
আসামের জল সম্পদ মন্ত্রী পিযুশ হাজারিকা বন্যা দুর্গত জেলা পরিদর্শন করেন। তিনি জানান, “১৩টি জেলা জুড়ে পুনরুদ্ধারের কাজ চলছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের পর্যাপ্ত সহায়তা দিচ্ছি এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো দ্রুত মেরামত করা হচ্ছে।“
সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন এবং পর্যাপ্ত সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। শনিবার জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর একটি দল আসামের বরাক উপত্যকা অংশে যান। তাঁরা জানিয়েছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা সেখানেই থাকবেন।
ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ডিমা হাসাও জেলায় ব্যাপক ভূমিধসের খবর পাওয়া গেছে যার ফলে বরাক উপত্যকা এবং আসামের বাকি অংশের মধ্যে রেল ও সড়ক যোগাযোগ উভয়ই ব্যাহত হয়েছে। তবে সোমবার আধিকারিকরা জানিয়েছেন, রেলওয়ে ট্র্যাকগুলি এখন কিছুটা ভাল অবস্থানে রয়েছে এবং কিছু আটকে পড়া ট্রেনকে ছাড়া হয়েছে।
১৩টি বন্যা কবলিত জেলার প্রায় ৪১ হাজার মানুষ ২৭৫ টি ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে। কাছাড় জেলায় সর্বাধিক সংখ্যক শিবির তৈরি করা হয়েছে। সেখানে ২২ হাজারেরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
এএসডিএমএ জানিয়েছে, রবিবার পর্যন্ত ৮১৪৩ হেক্টরেরও বেশি কৃষি জমি জলের নীচে রয়েছে। আগামী দিনে কৃষি উৎপাদনে এই বন্যা মারাত্মক প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা কৃষকদের।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন