লিভ-ইন-রিলেশনশিপ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করলো এলাহাবাদ হাইকোর্ট। “প্রত্যেক মরশুমে সঙ্গী বদলের এই ব্রিটিশ ধারণা কখনও একটি সুস্থ-স্বাভাবিক ও স্থায়ী সম্পর্কের প্রতীক হতে পারে না” বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্টের বিচারপতি সিদ্ধার্থ। লিভ-ইনে থাকাকালীন সঙ্গিনীকে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত আদনানের জামিনের আবেদন মামলার শুনানিতে এই পর্যবেক্ষণ করেছেন বিচারপতি।
চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি সিদ্ধার্থ-এর সিঙ্গেল বেঞ্চ এই মামলায় জানিয়েছিল, “বিবাহ একজন মানুষকে যে নিরাপত্তা, সামাজিক স্বীকৃতি ও স্থায়িত্ব দিতে পারে, সেটা কখনই লিভ-ইন-রিলেশনশিপ দিতে পারে না। ভারতের বিবাহের প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য এটা একটা সুশৃঙ্খল পরিকল্পনা হিসেবে কাজ করছে এই লিভ-ইন-রিলেশনশিপ।”
ভারতের মধ্যবিত্ত নৈতিকতাকে মাথায় রেখে আদালতের পর্যবেক্ষণ, “এই দেশে বিবাহের প্রতিষ্ঠান একেবারে অবলুপ্ত হয়ে যাওয়ার পরেই লিভ-ইন-রিলেশনশিপকে স্বাভাবিক বলে বিবেচনা করা যেতে পারে, তার আগে নয়। কারণ, যেসব তথাকথিত উন্নত দেশে এই লিভ-ইন-রিলেশনশিপ স্বাভাবিক একটা বিষয়, সেখানে বিবাহের প্রতিষ্ঠানকে রক্ষা ততটাই বড় সমস্যা।”
হাইকোর্টের নির্দেশনামাতেও উল্লেখ করা হয়েছে, “দেশে এইরকম প্রবণতা তৈরি করে আমরা নিজেরাই আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সমস্যার সৃষ্টি করছি।” আদালতের আরও পর্যবেক্ষণ, “অবাধ লিভ-ইন-রিলেশনশিপে থাকা এবং বৈবাহিক সম্পর্কে একজন সঙ্গীর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করাকে প্রগতিশীল সমাজের লক্ষণ হিসেবে দেখানো হয়েছে। আর এখানেই আমাদের দেশের যুব সম্প্রদায় এর সুদূরপ্রসারি ফলাফল না দেখে এই দর্শনের দিকে বেশি আকৃষ্ট হচ্ছে যা একেবারেই দীর্ঘ মেয়াদী নয়।”
উত্তরপ্রদেশের শাহারানপুরে দায়ের করা এক ১৯ বছর বয়সী মেয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে গত এপ্রিল মাসে গ্রেফতার করা হয় আদনানকে। লিভ-ইন সম্পর্কে থাকাকালীন সঙ্গীনীকে ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে আদনানের বিরুদ্ধে। বিবাহের লোভ দেখিয়েই ধর্ষণ করা হয়েছে বলেই অভিযোগ। সেই অভিযুক্ত আদনানের জামিনের আবেদন মামলার শুনানিতেই এই পর্যবেক্ষণ দিয়েছে এলাহাবাদ শীর্ষ আদালত।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন