সরকারি কর্মচারীদের পালন করতে হবে ‘জলাভিষেক’ নামক ধর্মীয় আচার! উত্তরাখণ্ড নারী ও শিশু কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী রেখা আর্যর ফতোয়া ঘিরে নিন্দার ঝড় উঠেছে সর্বত্র। নির্দেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন All India Federation of Anganwadi Workers and Helpers (AIFAWH)-র সাধারণ সম্পাদক এ আর সিন্ধু।
ধর্মীয় আচার পালন নিয়ে বার বার চর্চায় এসেছে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি। এবার উত্তরাখণ্ডের মন্ত্রীর নির্দেশে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে সরকারি কর্মীদের মধ্যে। বিবৃতি জারি করে মন্ত্রী রেখা আর্য জানিয়েছেন, সমস্ত সরকারি কর্মীদের ২৬ জুলাই নিকটবর্তী শিবমন্দিরে গিয়ে ‘জলাভিষেক’ নিয়ম পালন করতে হবে। শুধু তাই নয় প্রমাণ স্বরূপ ছবিও তুলতে হবে। অঙ্গনওয়াড়িতে কর্মরত সদস্যদেরও এই নিয়ম মানতে হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। ঐ নোটিশে উল্লেখ রয়েছে এই ধর্মীয় আচারের স্লোগান হবে ‘মুঝে ভী জন্ম লেনে দো, শিব কি মাহ মে শাক্তি কা সংকল্প’। এই কর্মসূচিটি মূলত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষিত ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’- এর অঙ্গ হিসেবে পালন করা হবে।
ভারতের সংবিধানের প্রস্তাবনায় লেখা আছে ভারত একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। সেই দেশে সকলের ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার আছে। তার পরেও কীভাবে একজন মন্ত্রী এইরকম নির্দেশ দিতে পারেন? অফিসে বহু ধর্মাবলম্বী মানুষ কাজ করেন। এই নির্দেশ তাঁদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করবে বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনেরা।
উত্তরাখণ্ডের মন্ত্রীর নির্দেশের কড়া সমালোচনা করেছেন AIFAWH-র সাধারণ সম্পাদক এ আর সিন্ধু। তিনি এই নির্দেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, "‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ এর জন্য শিবমন্দিরে ‘জলাভিষেক’ করার আদেশ অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানাই। ফেব্রুয়ারি মাস থেকে বন্ধ রয়েছে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের বেতন। সরকার এতই যদি মেয়েদের বাঁচাতে চায় তাহলে সেগুলি আগে পূরণ করুক।"
তিনি আরও বলেন, 'অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সাহায্যকারীরা ব্যক্তিগত ধর্মীয় বিশ্বাসের অন্তর্গত। হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান, উপজাতি এবং নাস্তিক সকলেই আছেন - যাদের ব্যক্তিগত ভিন্ন বিশ্বাস আছে। সরকারি কাজের অংশ হিসাবে ধর্মীয় অনুষ্ঠান করতে বলার অধিকার কোনও সরকার বা মন্ত্রকের নেই'।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন