গেরুয়া পোশাক পরে ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান তুলে তেলেঙ্গানার একটি মিশনারি স্কুলে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠলো একদল দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। কিছু ছাত্র গত কয়েকদিন ধরে স্কুলের ইউনিফর্মের বদলে গেরুয়া পোশাক পরিধান করে বিদ্যালয়ে আসায়, স্কুলের অধ্যক্ষ তাদের অভিভাবকদের স্কুলে ডাকেন এই বিষয়ে কথা বলার জন্য। এরপরই এই হামলার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় অধ্যক্ষ সহ স্কুলের দুই স্টাফের বিরুদ্ধেই ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
এনডিটিভি-র এক প্রতিবেদন অনুসারে, হায়দ্রাবাদ থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দূরে মাঞ্চেরিয়াল জেলার কান্নেপল্লী গ্রামের ব্লেসড মাদার তেরেসা হাই স্কুলে ঘটনাটি ঘটেছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ মারফত জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরে বিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র গেরুয়া পোশাক পরিধান করে স্কুলে আসছিল। অধ্যক্ষ জোসেফ বিষয়টি লক্ষ্য করার পর ছাত্রদের ডেকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। উত্তরে তারা জানায়, তারা হনুমান দীক্ষা পালন করছে। এটি ২১ দিনের একটি আচার, যার জন্য ২১ দিন তাদের এই পোশাক পরতে হবে। এরপর অধ্যক্ষ তাদের অভিভাবকদের স্কুলে আসতে বলেন এই বিষয়ে কথা বলার জন্য।
এরই মাঝে বিষয়টি সাম্প্রদায়িক রূপ নেয়। স্থানীয় এক সোশ্যাল ইউজারকারী সোশ্যাল মিডিয়ায় এক ভিডিও মারফত দাবি করেন, স্কুলে হিন্দু পোশাক পরে যাওয়ায় অধ্যক্ষের রোষের স্বীকার হচ্ছে পড়ুয়ারা। হিন্দু পোশাক পরতে বাধা দিচ্ছেন অধ্যক্ষ। মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায় ভিডিওটি। এরপরই স্কুলে হামলা চালায় উত্তেজিত জনতা।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে গেরুয়া-পরিহিত কয়েকজন ব্যক্তি জয় শ্রী রাম স্লোগান দিতে দিতে জানালার কাঁচ, বেঞ্চ ভাঙছে। শিক্ষকরা হাত জোড় করে তাদের থামতে অনুরোধ করছেন। পুলিশ কর্মীদের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতে এবং স্কুলের করিডোর থেকে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিতেও দেখা যাচ্ছে।
অন্য একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ক্যাম্পাসে থাকা মাদার তেরেসার মূর্তির দিকে ঢিল ছুড়ছে গেরুয়া পোশাকধারী জনতা।
জানা গেছে, বিক্ষোভকারীদের কয়েকজন প্রিন্সিপাল জোসেফকে ঘিরে ধরে মারধর করেছে এবং জোর করে তাঁর কপালে তিলক লাগিয়ে দিয়েছে। বিক্ষোভকারীরা স্কুলের কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবিও জানিয়েছে।
এই ঘটনায় ছাত্রদের অভিভাবকদের অভিযোগের ভিত্তিতে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা এবং ধর্মের ভিত্তিতে বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতা ছড়ানো সম্পর্কিত ধারায় অধ্যক্ষ সহ স্কুলের দুই স্টাফের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন