প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সম্পত্তির হিসাব দিল কেন্দ্র। আর সেই হিসাব অনুযায়ী বর্তমানে নরেন্দ্র মোদীর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ২.২৩ কোটি টাকারও বেশি।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর(PMO) থেকে নরেন্দ্র মোদী সহ সকল কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সম্পত্তির খতিয়ান প্রকাশ করা হয়েছে। ২০২২-এর ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময়কালের মধ্যে ঠিক কত বেড়েছে সম্পত্তির পরিমাণ, তারই হিসাব দিয়েছে PMO।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (পিএমও)-এর ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-এর মার্চ মাস পর্যন্ত মোদীর অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৯৭ লক্ষ ৬৮ হাজার ৮৮৫ টাকা। ২০২২-এর ৩১ মার্চে তা বেড়ে হয়েছে ২ কোটি ২৩ লক্ষ ৮২ হাজার ৫০৪ টাকা। অর্থাৎ ২৬ লক্ষের বেশি টাকা। ফিক্সড ডিপোজিট, ন্যাশনাল সেভিংস সার্টিফিকেটস, জীবন বিমা, গয়না, ব্যাঙ্কে জমা টাকা এবং হাতে থাকা নগদ মিলিয়ে মোদীর অস্থাবর সম্পত্তির এই হিসেব দেখিয়েছে PMO।
কেন্দ্রের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, মোদীর কোনও নিজস্ব বাড়ি, গাড়ি, জমি নেই। অর্থাৎ তাঁর নামে থাকা কোনও স্থাবর সম্পত্তি নেই। অথচ, গত বছর পর্যন্ত, প্রধানমন্ত্রীর স্থাবর সম্পত্তির মূল্য ছিল প্রায় ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকা!
প্রসঙ্গত, দুর্নীতি নিয়ে এক সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে জনরোষের মুখে পড়েছিলেন মোদী। তাঁর বিরুদ্ধে আনা বিভিন্ন অভিযোগ প্রসঙ্গে মোদী বলেছিলেন, 'হাম তো ফকির আদমি হ্যায়, ঝোলা লেকে চল পড়েঙ্গে জি’ অর্থাৎ 'আমি গরিব মানুষ, কিছু হলেই কাঁধে ঝোলা নিয়ে বেরিয়ে পড়বো'। তাহলে প্রধানমন্ত্রীর অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ বাড়ছে কীভাবে সেই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
গত বছর মোদীর হাতে নগদ ছিল ৩৬ হাজার ৯০০ টাকা, তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩৫ হাজার ২৫০ টাকায়। তাঁর ব্যাঙ্কে জমা টাকার পরিমাণও ১ লক্ষ ৫২ হাজার ৪৮০ টাকা থেকে কমে হয়েছে ৪৬ হাজার ৫৫৫ টাকা।
২০২১ সালে নিজের সম্পত্তির খতিয়ান দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং জানান, গুজরাটের গাঁধীনগরে মোদীর নামে ১৪ হাজার ১২৫ বর্গফুটের বেশি আয়তনের একটি বাসযোগ্য জমি ছিল। তবে সেটি তিনি অন্য তিন জনের সঙ্গে যৌথ মালিকানায় কিনেছিলেন। এই জমিটিতে তিন জনেরই সমান ভাগ ছিল। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন ২০০২ সালের ২৫ অক্টোবর এই জমি কিনেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। বর্তমানে ওই জমির আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকা। তবে বর্তমানে নিজের অংশ দান করে দেওয়ায় এই জমিতে তাঁর আর কোনও অধিকার নেই।
এখানেই শেষ নয়, সদ্য প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর কাছে ১ লক্ষ ৭৩ হাজার টাকা মূল্যের চারটি সোনার আংটি রয়েছে। এই চারটি আংটির মোট ওজন ৪৫ গ্রাম। এছাড়াও, মোদীর নামে ২০ হাজার টাকার এল অ্যান্ড টি বন্ড রয়েছে বলে জানানো হয়। ২০১২ সালে এল অ্যান্ড টি ইনফ্রাস্ট্রাকচারাল বন্ডে এই টাকা বিনিয়োগ করেছেন মোদী। যার কোনও উল্লেখ নেই এই বছরের নথিতে।
পাশাপাশি, মোদীর নামে পোস্ট অফিসের জাতীয় সঞ্চয় শংসাপত্রের সার্টিফিকেটের মূল্য ৮ লক্ষ ৯৩ হাজার ২৫১ টাকা থেকে বেড়ে ৯ লক্ষ ৫ হাজার ১০৫ টাকা হয়েছে। এমনকি বিমার মূল্যও ১ লক্ষ ৫০ হাজার ৯৫৭ থেকে বেড়ে হয়েছে ১ লক্ষ ৮৯ হাজার ৩০৫ টাকা। PMO-র দেওয়া তথ্যে উল্লেখ রয়েছে মোদীর স্ত্রী যশোদাবেনের নাম। কিন্তু তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ উল্লেখ করা হয়নি বলেই সূত্রের খবর।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন