ভারতের বহু পরিচিত স্বাধীন গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি রিসার্চ (CPR), বেসরকারি সংস্থা অক্সফাম ইন্ডিয়া (Oxfam) এবং বেঙ্গালুরুতে 'ইন্ডিপেন্ডেন্ট আন্ড পাবলিক ম্পিরিটেড মিডিয়া ফাউন্ডেশন' (IPSMF)-এর অফিসে আয়কর দফতরের 'উদ্দেশ্যপ্রণোদিত' হানা নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে বিভিন্ন মহলে।
বুধবার, দুপুর ১ টানা নাগাদ CPR, Oxfam, IPSMF-এর অফিসে একযোগে তল্লাশি অভিযান চালায় আয়কর বিভাগ। সূত্রের খবর, এই সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে বিদেশি অনুদান নিয়ন্ত্রণ আইন (FCRA) লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
তবে, নানা বিষয়ে মোদী সরকারের সমালোচক এই সংস্থাগুলির দপ্তরে আচমকা আয়কর তল্লাশি নিয়ে বিভিন্ন মহলে জোরালো সন্দেহ দানা বেঁধেছে।
এই ঘটনাকে 'নৃশংস' বলে নিন্দা করেছেন প্রবীন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রামেশ (Jairam Ramesh)। টুইটারে তিনি জানান, 'মোদী ও শাহের নির্দেশে CPR, Oxfam এবং IPSMF-এর মতো স্বাধীন স্বচ্ছাসেবী সংস্থার উপর অভিযান চালানো হয়েছে। এটি একেবারেই নৃশংস ঘটনা। এটি সকল স্বাধীন গণমাধ্যম ও কণ্ঠকে শেষ করার জন্য আগ্রাসী পদক্ষেপ!'
মোদী সরকারের শাসনামলে আয়কর দফতরের এহেন পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে DIGIPUB। এক প্রেস বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, 'সাম্প্রতিক বছরে এ ধরনের অভিযান নতুন নয়। অভিযোগ বা প্রমাণের কোনও স্পষ্টতা ছাড়াই, জনসেবা-সাংবাদিকতার সাথে জড়িত সংস্থাগুলিকে ভয় দেখানো এবং হয়রানির জন্য আয়কর দফতরকে ব্যবহার করা হচ্ছে।’
একইসঙ্গে বলা হয়েছে, ‘এটি মানবসম্পদের অপব্যবহার। সাধারণত সরকারি অফিসারেরা প্রশাসনিক ক্ষেত্রে নিজেদের অবদান তুলে ধরতে কাজ করে থাকেন। এই ধরণের আচরণ তাঁদের দক্ষতাকে অপমান করার সামিল। তবে আয়কর দফতরকে অবশ্যই ব্যাখ্যা দিতে হবে, কেন তাঁরা এই সংস্থাগুলির উপর তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে।’
DIGIPUB-এর তরফে ধন্য রাজেন্দ্রন ও অভিনন্দন শেখরি বলেন, ‘স্বাধীন সাংবাদিকদের ওপর যে কোনো হামলা আমাদের দেশে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার জন্য হুমকিস্বরূপ। এই ধরনের কর্মকাণ্ড শুধুমাত্র আমাদের গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভকে হ্রাস করে না, এটি জানান দেয় যে আমাদের সরকার স্বাধীন মিডিয়ার প্রতি কতটা নিষ্ঠুর।’
এই ইস্যুতে মুখ খুলেছেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামনিস্ট সাগরিকা ঘোষ। টুইটারে তিনি লেখেন, #CPR #IPSMF #Oxfam-এ 'সমীক্ষা' চালাচ্ছে আয়কর দফতর।'
টুইটারে জার্মান ধর্ম যাজক মার্টিন নিমোলার একটি উক্তির সুরে তিনি লেখেন, ‘প্রথমে তারা সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটদের জন্য এসেছিল, আমি চুপ ছিলাম। তারপর ট্রেড ইউনিয়ন কর্মীদের জন্য এসেছিল, আমি নীরব ছিলাম। তারপর ইহুদিদের জন্য, আমি চুপ ছিলাম। আর যখন তারা আমার বিরুদ্ধে আসল, তখন আমার জন্য সুপারিশ করার কেউ ছিল না।’ সাগরিকা ঘোষের এই লেখাটি দেশবাসীর জন্য একটি সতর্কবার্তা বলে মনে করছেন অনেকে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন