টিআরপি (TRP) চাই। প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে হবে। দর্শকদের মাতিয়ে তাঁদের মনোযোগ পেতে হবে। এই ভাবনা থেকে নিজেদের মধ্যে নিরন্তর লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে ভারতীয় গণমাধ্যম, বিশেষ করে টিভি চ্যানেলগুলি।
ভারতে বিভিন্ন ভাষায় প্রায় হাজারের কাছাকাছি স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল আছে। এর একটি বড় অংশ নিজেদের এগিয়ে রাখতে গিয়ে বিতর্কিত, রাজনৈতিক এবং বিভাজন সৃষ্টিকারী বক্তব্য পরিবেশন করছে। এটি প্রায়শই অস্বস্তিকর পরিস্থিতির দিকে গেছে।
সম্প্রতি, সর্বভারতীয় এক টেলিভিশন চ্যানেলের বিতর্কে প্ররোচিত হয়ে হজরত মহম্মদের বিরুদ্ধে অবমাননাকর মন্তব্য করেন বিজেপির মুখপাত্র নূপুর শর্মা। এর জেরে কানপুরে গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে এই ঘটনায় বিশ্বজুড়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। আরব সহ মুসলিম বিশ্বের প্রায় ১৫টি রাষ্ট্র মোদী সরকারের প্রতি ক্ষোভ নিজেদের উগরে দিয়েছে। অনেকে জনসমক্ষে মোদী সরকারকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে নূপুর শর্মাকে দল থেকে সাসপেন্ড করেছে বিজেপি। টুইটারে একই ধরনের মন্তব্যের জন্য বিজেপি নেতা নবীন কুমার জিন্দালকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। কিন্তু তারপরেও বিতর্ক থামেনি।
সমীক্ষা রিপোর্ট
এই পরিস্থিতিতে ভারতের একটা বড় অংশের মানুষ মনে করছেন - সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের প্রচার-প্রসার করে এমন অনুষ্ঠান এবং বিতর্কসভা সম্প্রচার বন্ধ করার উপযুক্ত সময় এসেছে টিভি চ্যানেলগুলির।
এ নিয়ে ভারতীয়দের মনোভাব বোঝার জন্য দেশজুড়ে যৌথভাবে একটি সমীক্ষা চালিয়েছে সংবাদ সংস্থা আইএএনএস (IANS) এবং সি-ভোটার (CVoter)। সেই সমীক্ষা রিপোর্টে জানা যাচ্ছে, মোট উত্তরদাতাদের ৭৭ শতাংশ মনে করেন- টিভি চ্যানেলগুলিতে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ সৃষ্টিকারী অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা বন্ধ করা উচিত। অন্যদিকে, ২৩ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, টিভি চ্যানেলগুলি যা সম্প্রচার করছে তাতে আপত্তির কিছু নেই।
বিরোধী থেকে এনডিএ (NDA) সমর্থক
সমীক্ষায় আরও জানা গেছে, টিভি চ্যানেলগুলিকে বিভাজনমূলক অনুষ্ঠান এবং বিতর্ক এড়িয়ে চলতে হবে বলে মত দিয়েছেন মোদী সরকার বিরোধী ৭৮ শতাংশ মানুষ। আবার এই মতের সঙ্গে সহমত হয়েছেন মোদী সরকার সমর্থক ৭৫ শতাংশ মানুষ।
বয়স অনুসারে
বর্তমানে যুব সম্প্রদায়ের সিংহভাগ মনে করেন টিভি চ্যানেলগুলিকে বিভেদমূলক বিতর্ক. প্রচার এড়ানো উচিত। ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সী প্রায় ৮০ শতাংশ যুবক-যুবতী এই মত দিয়েছেন। আবার একই মত পোষণ করেছেন ৫৫ বছরের বেশি মানুষেরাও। তাঁদের পরিমাণ ৭১ শতাংশের বেশী। অর্থাৎ, ভারতের বড় অংশের জনগোষ্ঠী টেলিভিশন চ্যানেলে বিদ্বেষসূচক, বিভাজনমূলক অনুষ্ঠান এবং বিতর্ককে সমর্থন জানাচ্ছেন না। কারণ, সাধারণ ভারতীয়রা বেকারত্ব এবং মুদ্রাস্ফীতির মতো বিষয় নিয়ে বেশি উদ্বিগ্ন।
- With IANS Inputs
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন