ভারতে মুদ্রাস্ফীতি চরম আকার ধারণ করার মূলে রয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। হ্যাঁ, একথাই জানালেন রির্জাভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস। মুম্বাইয়ের ব্যবসায়ী, শিল্পপতি এবং ব্যাঙ্ক মালিকদের যৌথ সম্মেলনে বক্তব্য রাখার সময় একথা জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার, মুম্বাইয়ের নরিম্যান পয়েন্টে অবস্থিত একটি ৫ তারা (Five Star) হোটেলে দু'দিন ব্যাপী এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। বণিকসভা ফিকি (ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি) এবং ব্যাঙ্ক মালিকপক্ষের সংগঠন আইবিএ (ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্কস অ্যাসোসিয়েশন)-র যৌথ উদ্যোগেই এই সম্মেলন হয়। বুধবার সেই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস।
উদ্বোধনী বক্তৃতায় তিনি বলেন - দেশে মুদ্রাস্ফীতির হারকে নামিয়ে আনার প্রাথমিক লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক, একথা ঠিক। একটানা এই হার ক্রমশই উর্ধ্বমূখী হয়েছে। কিন্তু করোনা পরবর্তী সময়ে যখন দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ঘুরে দাঁড়ানোর মুখে, তখন RBI যদি আরও আগে সুদের হার বাড়িয়ে মুদ্রাস্ফীতিকে আয়ত্তে আনার চেষ্টা করত, তাহলে পুনরুজ্জীবন প্রক্রিয়া ব্যাহত হত।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে ভাবা হয়েছিল, মুদ্রাস্ফীতির হারকে অনেকটাই নামিয়ে আনা সম্ভব হবে। কিন্তু গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে লাফিয়ে বাড়তে থাকে বিভিন্ন পণ্যের দাম। আর্থিক বাজারে যার চূড়ান্ত নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
শক্তিকান্তর দাবি, আমরা আমাদের অর্থনীতির এক সম্পূর্ণ নিম্নমূখী অভিমুখকে আটকে দিয়েছি। আরও আগে ব্যাঙ্ক সুদের হার বাড়ালে তার চড়া মূল্য দিতে হত দেশের অর্থনীতি এবং নাগরিকদের। RBI চায়নি করোনা পরবর্তী পর্যায়ে সুদের হার বাড়িয়ে অর্থনীতির গতিকে শ্লথ করে দিতে।
প্রসঙ্গত, দেশে একটানা প্রায় ৯ মাস ধরে মুদ্রাস্ফীতির হার রয়েছে ৬ শতাংশের উপরে। যা একটি দেশের মানুষের জীবনযাত্রা এবং অর্থনৈতিক পরিকাঠামোর জন্য মোটেও স্বাভাবিক নয়। RBI-র ধারণা ছিল, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারী-মার্চ মাস নাগাদ এই হার নেমে আসবে ৪.৩ শতাংশে। বিশেষজ্ঞদের অনুমান অনুযায়ী তা ছিল ৫ শতাংশ। কিন্তু এর কোনওটাই বাস্তবায়িত হয়নি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন