'এক দশক আগে ভারতে যে উদার গণতন্ত্র ছিল, তা এখন আর নেই’ বলে মন্তব্য করেছেন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন (Raghuram Rajan)। একইসঙ্গে প্রতিবেশী শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সমস্যার কথা বলতে গিয়ে তিনি জানান, ‘শ্রীলঙ্কার অর্থনীতির একটি ভারসাম্য ছিল। কিন্তু, সংখ্যালঘুদের মধ্যে অস্থিরতা তৈরির মাধ্যমে সেই ভারসাম্য নষ্ট করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘শ্রীলঙ্কায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় হল তামিলরা। যখন দেশটিতে বেকারত্ব মাথা চাড়া দিয়েছিল, সেসময় এই সমস্যা থেকে নজর ঘোরাতে সংখ্যালঘুদের নিয়ে রাজনীতি করেছে রাজনীতিবিদরা। তারা সংখ্যালঘুদেরই জুজু বানিয়ে সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি করেছে। এই পদক্ষেপ অবশ্যম্ভাবী গৃহযুদ্ধের দিকে নিয়ে গেছে।’
এরপরেই পরামর্শের সুরে রাজন বলেন- ‘আমার মনে হয়, শ্রীলঙ্কার আর্থিক সংকট থেকে ভারতের শিক্ষা নেওয়া উচিত। তাই আসুন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ঐক্যের জন্য আমরা কাজ করি। এটি দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী এবং অখণ্ডতা রক্ষার জন্য কার্যকরী হবে।’
সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ বা অশান্তি থেকে কীভাবে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে? জবাবে রাজন বলেন,‘মানুষ উদ্বিগ্ন হলে, তারা পরিণাম নিয়ে ভাবে। আর তারপর তাঁরা চিন্তা করে, আমার কি এমন দেশে ব্যবসা করা উচিত, যেখানে সংখ্যালঘুদের সঙ্গে অন্যায় হয়?’
একইসঙ্গে চীনের উইঘুর প্রসঙ্গও তুলে ধরেন রঘুরাম। তিনি বলেন, ‘উইঘুর মুসলমানদের উপর নির্যাতনের কারণে চীনের উপর লাগাতার চাপ সৃষ্টি করেছে আমেরিকা ও ইউরোপ। এর জেরে - বহু ব্যবসায়ীর মনেই দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়েছে। উইঘুর অধ্যুষিত এলাকায় কাজ করার ব্যাপারে তারাও উদ্বিগ্ন হচ্ছে। ফলে, সেখানেও সমস্যা বাড়ছে।’
এর আগে রাজন বলেন, ‘অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য গণতন্ত্রের উদার হওয়া প্রয়োজন। গণতন্ত্র এবং প্রতিষ্ঠান যত শক্তিশালী হবে, দেশ তত বেশি উন্নতি করবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘দেশে কর্তৃত্ববাদী নেতৃত্বের প্রয়োজন নেই। দেশের প্রয়োজন উন্নয়নের পুরানো মডেল। এখন পণ্য এবং পুঁজির উপর ফোকাস করা হয়। তবে ফোকাস হওয়া উচিত মানুষ এবং ধারণার উপর।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন