৪ মাসেরও বেশি সময় পর মণিপুরে ফিরছে ইন্টারনেট পরিষেবা। শনিবার সকালে সাংবাদিক সম্মেলন করে এমনটাই ঘোষণা করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। পাশাপাশি বীরেন সিং এদিন জানিয়েছেন, “শেষ ২ মাসে পরিস্থিতি অনেকটাই শান্ত হয়েছে। সন্ত্রাস কবলিত এলাকায় পুলিশ ও নিরাপত্তা কর্মীদের মোতায়েন করার পর থেকে সন্ত্রাসের ঘটনাও তুলনামূলকভাবে অনেক কমেছে।”
গত ৩ মে মণিপুরে মেইতেই ও কুকি গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাতের মধ্যে দিয়ে হিংসার শুরু। সেইদিনই সন্ত্রাস ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে গোটা রাজ্য জুড়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট পরিষেবা। তারপর টানা ৪ মাস সেই পরিষেবা বন্ধ থাকার পর অবশেষে শনিবার আবার সেই পরিষেবা চালু করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং। শনিবার সকালে তিনি জানিয়েছেন, “ভুয়ো খবর এবং হিংসাত্মক ও উত্তেজক মন্তব্য ছড়িয়ে পড়া রুখতে সরকার গত ৩ মে রাজ্যে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছিল। এখন পরিস্থিতি আগের থেকে অনেকটাই স্বাভাবিক হওয়ায় আজ থেকেই ফের মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করা হচ্ছে।”
পাশাপাশি, মণিপুরের ইন্দো-মায়ানমার সীমান্ত দিয়ে বেআইনি অভিবাসন রুখতে বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি। ইন্দো-মায়ানমারের সীমান্তের কাছাকাছি বসবাসকারীদের জন্য দুই তরফের সীমানার ১৬ কিলোমিটার পর্যন্ত কোনও নথি ছাড়া যাতায়াতে যে ছাড় ছিল, এবারে তা বন্ধ করার ইঙ্গিত দিয়েছেন বীরেন সিং। রাজ্যের সীমান্ত দিয়ে ‘বেআইনি অভিবাসন’ নিয়ে কড়া বার্তা দিয়ে তিনি জানিয়েছেন, “কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মণিপুরের আন্তর্জাতিক সীমান্তের ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার পদক্ষেপ নিয়েছেন। আমাদের সরকার তাঁকে কোনও নথি ছাড়াই সীমান্ত পারাপার বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করেছিল। এছাড়া, সীমান্তরক্ষীরাও ঠিকঠাক পাহারা দিচ্ছেন না। একেবারে সীমান্ত বরাবর টহল দেওয়ার পরিবর্তে তারা ভারতীয় সীমান্তের ১৪-১৫ কিলোমিটার ভিতরে পাহারা দিচ্ছেন।”
এদিন মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন, মণিপুরের পূর্ববর্তী কংগ্রেস সরকারের অপরিকল্পিত নীতির ফলেই রাজ্যের এমন দশা হয়েছে। গত তিন-চার মাসে মণিপুরে যে সন্ত্রাস ছড়িয়েছে, তার জন্য বর্তমান সরকারের কোনও সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত দায়ী নয়। রাজ্যের সাম্প্রতিক বনধ নিয়ে বীরেন সিং জানিয়েছেন, “এই ধর্মঘটের ফলে রাজ্যের আসল সমস্যা থেকে মানুষের দৃষ্টি সরে গিয়ে নিজেদের মধ্যেই সংঘাত তৈরি হচ্ছে। রাজ্যের বিধায়ক, মন্ত্রী ও পুলিশ আধিকারিকরা লাঞ্ছিত হচ্ছেন।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন