ভারতীয় সাংবাদিকরা আগে এমন অনেক খবর করতেন বা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হত, তাতে দেশজুড়ে যথেষ্ট আলোড়ন তৈরি হত। কিন্তু সেসব অনেক পুরোনো কথা। সেরকমটা এখন আর দেখা যায় না। দেশে তদন্তমূলক সাংবাদিকতাই বা হয় কোথায়! রীতিমতো আক্ষেপের সুর শোনা গেল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এনভি রামানা। সাংবাদিক ইউ সুধাকর রেড্ডির রচিত একটি বই প্রকাশের অনুষ্ঠানে অনলাইনে যোগ দেন তিনি। সেখানে প্রধান বিচারপতি এমনই আক্ষেপ করলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আজকের সংবাদ মাধ্যমের বিষয়ে ব্যক্তিগত মতামত জানানোর স্বাধীনতা থাক। এমনটাই চাইছি। দুর্ভাগ্যবশত ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম থেকে তদন্তমূলক সাংবাদিকতা ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে।’ তাঁর মতে, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সমষ্টিগত ব্যর্থতাকে তুলে ধরার দায়িত্ব নিতে হবে সংবাদ মাধ্যমকে। তাঁর কথায়, জনগণকে সচেতন করার দায়িত্ব সংবাদ মাধ্যমেরই।
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ‘আমাদের বড় হয়ে ওঠার সময় অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতাম সংবাদপত্রের। দেশের কত বড় বড় কেলেঙ্কারির খবর তো এই সংবাদমাধ্যমেই ফাঁস হয়েছে। তখনকার সংবাদপত্র আমাদের মনের স্বাদ পূরণ করেছে। গুরুত্বপূর্ণ খবরের প্রতিবেদন গুরুতর প্রভাব ফেলত।' তাঁর কথায়, এখন হাতেগোনা একটি বা দুটি খবর। সেগুলি ছাড়া এমন কোনও প্রতিবেদন তিনি পড়েননি, যেটা যথেষ্ট সাড়া ফেলতে পারে।
গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ সংবাদ মাধ্যম। নির্ভীক সংবাদ পরিবেশনই এই স্তম্ভকে শক্তিশালী করে তুলেছে, যার ওপর ভিত্তি করে শক্তিশালী হয়েছে গণতন্ত্র। সেখানে তদন্তমূলক সাংবাদিকতা বরাবরই সর্বাধিক গুরুত্ব পেয়ে এসেছে। কিন্তু বর্তমানে সংবাদ পরিবেশন নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠেছে। সাংবাদিক, প্রতিষ্ঠান, বহু ক্ষেত্রেই উঠেছে প্রশ্ন। সেই প্রশ্নকেই যেন আরও একবার উস্কে দিলেন প্রধান বিচারপতি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন