গোরুকে জাতীয় পশু ঘোষণা করার আবেদন খারিজ করল দেশের শীর্ষ আদালত। সোমবার এই সংক্রান্ত আবেদনের শুনানি করতেও অস্বীকার করেছে সুপ্রিম কোর্ট। আবেদনে দেশের সর্বত্র গোরক্ষার দাবিও জানানো হয়েছিল। বিচারপতি এস কে কউল এবং বিচারপতি অভয় এস ওকার ডিভিশন বেঞ্চ এই আবেদন খারিজ করে দেয়।
গোরুকে জাতীয় পশু হিসেবে ঘোষণা করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার যাতে নির্দেশ দেয় সে বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছিল 'গোবংশ সেবা সদন' সহ বেশ কয়েকটি সংগঠন। তাঁদের মূল দাবি, গোহত্যার ফলে মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।
পুরো বিষয়টি যখন সামনে আসে তখন আবেদনকারীর পক্ষের আইনজীবী আদালতের সওয়ালে বলেন, গোরুর সুরক্ষা ভারত সরকারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ধরণের মন্তব্যের পর আবেদনকারীর আইনজীবীকে তীব্র ভর্ৎসনা করেন শীর্ষ আদালতের বিচারপতিরা।
বিচারপতির কথায়, কোনও প্রাণীকে জাতীয় পশু ঘোষণা করা কি আদালতের কাজ? আপনি কি করে এমন আবেদন জানাতে পারেন? আপনি যে ৩২ ধারার অধীনে পিটিশন দাখিল করেছেন তাতে কোন মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে? আপনি এই ধরনের পিটিশন নিয়ে আদালতে এসেছেন বলেই কি আদালতকে তাতে প্রাধান্য দিতে হবে? আপনি কেন এমন ধরণের পিটিশন দাখিল করেছেন যাতে আমরা জরিমানা আরোপ করতে বাধ্য হই?
এই ঘটনার পর অবিলম্বে আবেদনকারীকে তাঁর আবেদন প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। অন্যথায় আবেদনকারীর বিরুদ্ধে জরিমানা ধার্য করা হবে। শেষ পর্যন্ত আবেদন প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছে সংগঠনগুলি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে রাজস্থান হাইকোর্টের বিচারপতি একটি মামলার শুনানি চলাকালীন গোরুকে গোমাতা আখ্যা দেন। তাঁর দাবি ছিল, গোহত্যার চেয়ে বড় অপরাধ আর কিছু হতে পারে না। তিনি আরও বলেছিলেন, সংবিধানের ৪৮ ও ৫১এ(জি) ধারা অনুযায়ী গোরুকে জাতীয় পশুর আইনি মর্যাদা দেওয়া যেতে পারে।
পাশাপাশি, ২০২১ সালে গোহত্যা সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি শেখরকুমার যাদব বলেছিলেন, এই দেশের সংস্কৃতির সাথে গোরু ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই গোরুকেই দেশের জাতীয় পশু করা উচিত।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন