বায়ু দূষণের জন্য কৃষকদের দায়ী করায় দিল্লি ও কেন্দ্র সরকারকে তীব্র ধমক দিল সুপ্রিম কোর্ট। কোনোকিছু না ভেবেই কৃষকদের ওপর সমস্ত দোষ চাপিয়ে দেওয়া বর্তমানে ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে অথচ ধুলো, আতশবাজি, শিল্প এবং যানবাহনের কারণে সৃষ্ট দূষণের বিষয়ে কারো খেয়াল নেই বলে মন্তব্য আদালতের।
গত এক সপ্তাহ ধরে ধোঁয়াশার মোটা চাদরে ঢেকে রয়েছে রাজধানী ও সংলগ্ন এলাকা। জরুরী পরিস্থিতিতে আজ সুপ্রিম কোর্টে এই বিষয়টি নিয়ে শুনানি হয়। প্রধান বিচারপতি এন ভি রমানার নেতৃত্বাধীন বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি সূর্যকান্তের বেঞ্চ দিল্লি সরকারের তরফ থেকে আদালতে উপস্থিত থাকা সিনিয়র অ্যাডভোকেট রাহুল মেহরাকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার কী ভূমিকা নিয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন করে? স্মগ টাওয়ারের কী হলো এবং তা আদৌ কাজ করছে কিনা জানতে চায় বেঞ্চ।
মেহরা উত্তরে জানান, স্মগ টাওয়ার ঠিকঠাকই কাজ করছে। ৩০ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে এয়ার কোয়ালিটি ইন্ডেক্স বা AQI ছিল ৮৪ অর্থাৎ 'সন্তোষজনক'। কিন্তু এক মাসের মধ্যেই তা ৪৭১-এ (গুরুতর) পৌঁছেছে। সম্ভবত কৃষকদের দ্বারা খড় পোড়ানোর কারণে এমনটা হয়েছে।
মেহরার এই উত্তরেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন বিচারপতি সূর্যকান্ত। তিনি বলেন, "সবকিছুর জন্য কৃষকদের দায়ী করা এখন ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। গত সাতদিনে দিল্লিতে কত বাজি ফাটানো হয়েছে আপনি দেখেছেন? বাজি নিষিদ্ধের কী হলো? দিল্লি পুলিশ কী করছে? খড় পোড়ানো দূষণের একটা অংশ মাত্র। ধুলো, আতশবাজি, শিল্প এবং যানবাহনের কারণে সৃষ্ট দূষণের বিষয়ে কারো খেয়াল আছে?"
বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, "সমস্যাটি উদ্দীপনার। আপনি যদি কৃষকদের বিকল্প কোনো ইনটেনসিভ না দিতে পারেন তাহলে পরিস্থিতির পরিবর্তন করা যাবে না। বল প্রয়োগ করে কিছু হবে না।"
কেন্দ্রের তরফ থেকে উপস্থিত থাকা সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা জানান, সরকার এই বিষয়টির দিকে খেয়াল রাখছে। নতুন মেশিন তৈরি করা হচ্ছে।
এর উত্তরে বিচারপতি সূর্যকান্ত বলেন, এটি একটি জরুরি পরিস্থিতি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। গবেষণা করে রিপোর্ট তৈরি করে তা প্রয়োগ করা পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করতে পারিনা।
জরুরি ভিত্তিতে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করতে দু'দিনের লকডাউন আরোপের পরামর্শ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন