সংবাদমাধ্যমগুলিকে দিল্লি হিংসা নিয়ে 'উত্তেজনাপূর্ণ' এবং উস্কানিমূলক' খবর কভারেজ না করার পরামর্শ দিল কেন্দ্র সরকার। শনিবার তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের তরফ থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে একথা জানানো হয়েছে। ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘর্ষ নিয়েও একই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "সাম্প্রতিক অতীতে দেখা গেছে কয়েকটি স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল কিছু ঘটনার কভারেজ এমনভাবে করেছে যা অসমর্থিত, বিভ্রান্তিকর, উত্তেজনাপূর্ণ। সামাজিকভাবে একেবারেই অগ্রহণযোগ্য ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে। রুচি ও শালীনতার কোনো ছাপ নেই। মানহানিকর এবং সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক মন্তব্য রয়েছে। এই সবগুলিই প্রোগ্রাম কোডের ২০ ধারার ২ নম্বর উপধারা লঙ্ঘন করে। বিশেষ করে উত্তর পশ্চিম দিল্লির দাঙ্গার ঘটনা, রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত এবং আরও বেশ কয়েকটি বিশেষ খবরের কভারেজে এরকম হয়েছে। এগুলোতে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।"
অ্যাডভাইজরিতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, 'রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে চ্যানেলগুলি মিথ্যা দাবি করছে। আন্তর্জাতিক সংস্থার উদ্ধৃতি হিসেবে যেগুলো তুলে ধরা হচ্ছে সেগুলো একেবারেই ভুল। মানহানিকর শিরোনাম বা ট্যাগলাইন ব্যবহার করছে, যেগুলোর সাথে সংশ্লিষ্ট সংবাদের কোনো সম্পর্ক নেই। চ্যানেলগুলোর সাংবাদিক বা অ্যাঙ্কর শ্রোতাদের উত্তেজিত করার উদ্দেশ্যে মনগড়া বা হাইপারবোলিক বিবৃতি দিচ্ছেন।"
মন্ত্রকের বিবৃতিতে উদাহরণও তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, "গত ১৮ এপ্রিল এক নিউজ চ্যানেলে একটি প্রোগ্রাম রাখা হয়েছিল - 'ইউক্রেন মে অ্যটোমি হড়কম্প', যেখানে উল্লেখ্য করা হয়েছিল রাশিয়া ইউক্রেনের উপর পারমাণবিক হামলার পরিকল্পনা করছে এবং ২৪ ঘন্টার মধ্যে তা করা হবে। আর একটি চ্যানেলে আসন্ন পারমাণবিক হামলার প্রমাণ হিসেবে একটি ভুল ছবি দেখানো হচ্ছে। আন্তর্জাতিক এজেন্সির ভুল বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলা হচ্ছে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। এই ধরনের অনুমানমূলক খবর দর্শককে বিপথগামী করতে এবং তাঁদের ভিতরে মনস্তাত্ত্বিক উত্থান জাগানোর উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।"
একই ভাবে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের কভারেজ নিয়েও চ্যানেলগুলিকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে মন্ত্রক। উদাহরণ তুলে বলা হয়েছে, "একটি চ্যানেল বারবার হাতে অস্ত্র ধরা এক ব্যক্তির ভিডিও ক্লিপিং প্রচার করছে এবং দাবি করছে ধর্মীয় মিছিল থেকে সহিংসতা ছড়ানো পূর্ব পরিকল্পিত ছিল। 'ভোট ব্যাংক বনাম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজনীতি' এই শীর্ষক নামে চ্যানেলে আলোচনা করা হচ্ছে। এই ধরনের খবর দর্শকদের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। সাম্প্রদায়িক বৈষম্যকে উস্কে দিতে পারে এবং বৃহত্তরভাবে শান্তি নষ্ট করতে পারে।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন