ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন বা BBC-র দিল্লি অফিসে এখনও চলছে আয়কর অভিযান। সূত্রের খবর, গত দু-দিন দিল্লি অফিসেই রাত কাটিয়েছেন বিবিসি’র ১০ জন কর্মী।
২০০২ সালের গুজরাট হিংসা নিয়ে তৈরি বিবিসি (BBC)-র তথ্যচিত্র 'ইন্ডিয়া: দ্যা মোদী কোয়েশ্চেন' প্রচারের কয়েক সপ্তাহ পরে এই অভিযান চালাচ্ছে আয়কর দফতর (Income Tax)।
গত মঙ্গলবার, সকাল সাড়ে ১১টার সময়, একযোগে দিল্লি ও মুম্বাইয়ের বিবিসি অফিসে অভিযান চালায় আয়কর দফতরের অফিসারেরা। দীর্ঘ ৫০ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও, সেই অভিযান এখনও চলছে।
বিবিসি দিল্লি জানিয়েছে, তাঁদের সংবাদ সম্প্রচার স্বাভাবিক, প্রতিদিনকার মতোই সম্প্রচার হচ্ছে। অনেক কর্মচারী বাড়ি থেকে কাজ করছে (Work from Home)।
তবে, কতক্ষণ এই অভিযান চলবে তা নিয়ে এখনও নিশ্চিত নয় বিবিসি। অন্যদিকে, আয়কর দফতর জানিয়েছে, ‘অপারেশন বন্ধের সঠিক সময়সীমা সম্পূর্ণরূপে অফিসারদের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে।’
আয়কর দফতরের অফিসারেরা জানিয়েছেন - 'এটি কোনও অভিযান নয়, এটি একটি 'সমীক্ষা' (survey)।' গোড়া থেকেই আয়কর দফতর ওই অভিযানকে রুটিন 'সমীক্ষা' বলে দাবি করেছে।
মূলত কর ফাঁকি ও ট্রান্সফার প্রাইসিং সংক্রান্ত বিষয় খতিয়ে দেখতেই এই 'সমীক্ষা' চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে আয়কর দফতর। সূত্রের মতে, আয়কর দফতরের অফিসাররা সংস্থার কম্পিউটার ও ল্যাপটপে 'শেল কোম্পানি,' 'ফান্ড ট্রান্সফার,’ ‘ফরেন ট্রান্সফার’-এর মতো শব্দগুলি খুঁজেছেন।
এই ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র নেড প্রাইস-l (Ned Price) সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, 'ভারতের কর কর্তৃপক্ষের তরফে বিবিসি-র অফিসে যে তল্লাশি চালানো হয়েছে তা আমরা জানি।'
তবে, বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তিনি। শুধু মতপ্রকাশের স্বাধীনতার স্বপক্ষে সওয়াল করেছেন নেড প্রাইস। তিনি বলেন, 'সারা বিশ্বে মুক্ত সংবাদমাধ্যমের গুরুত্বকে সমর্থন করি আমরা। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা, মানবাধিকার সারা বিশ্বে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে নিজেদের ভূমিকা রাখে। এগুলি আমেরিকার গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করেছে। এগুলি ভারতের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করেছে।'
এদিকে, বিবিসি'র দিল্লি অফিসে আয়কর অভিযানের একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, এক বিবিসি কর্মীর সঙ্গে বচসায় জড়িয়েছেন আয়কর দফতরের এক অফিসার।
ভিডিওতে দেখা যায়, এক আয়কর অফিসার বিবিসির অফিসে ঢোকার জন্য চাবি চাইছেন। এর বদলে বিবিসির কর্মী সেই অফিসারের থেকে ওয়ারেন্ট দেখতে চাইছেন। এরপর আয়কর আধিকারিক রেগে গিয়ে নিজের পরিচয় দেন এবং বিবিসির কর্মীদের কাছ থেকে তাঁদের ফোন চান। সেই সময় এক মহিলা কর্মী আয়কর অফিসারের উদ্দেশে বলেন, 'আপনি ভালোভাবে কথা বলুন। চেঁচাবেন না।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন