দিল্লির জাহাঙ্গিরপুরী হিংসা মামলায় নয়া মোড়। হিংসা রোধে কেন্দ্র পরিচালিত দিল্লি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দিল্লির অতিরিক্ত দায়রা বিচারক গগনদীপ সিং।
সূত্রের খবর, গত ১৬ এপ্রিল, জাহাঙ্গিরপুরীর হনুমান জয়ন্তীর মিছিলে কোনও পুলিশি অনুমতি ছিল না। তারপরেও এই মিছিলে উপস্থিত ছিল দিল্লি পুলিশ। পরে এই হনুমান জয়ন্তীর মিছিল ঘিরে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ায় এবং সংঘর্ষের চেহারা নেয়। আর এই বিষয়টি সামনে এনে এদিন দিল্লির রোহিণীর আদালত প্রশ্ন তুলেছে, 'বিনা অনুমতির মিছিলে কী করে পুলিশ উপস্থিত ছিল? কেন পুলিশ সেই মিছিল বন্ধ করেনি?’ শুধু তাই নয়, এই মিছিল আর তার জেরে হওয়া হিংসার ঘটনায় কেন্দ্রীয় সরকারের নেতৃত্বাধীন দিল্লি পুলিশের ভূমিকাই তদন্ত করে দেখা উচিত বলে জানিয়েছে আদালত।
এদিন বিচারক গগনদীপ সিং বলেন, 'রাজ্যের পক্ষ থেকে এটা মোটামুটিভাবে স্বীকার করা হয়েছে যে শেষ মিছিলটি, যা জাহাঙ্গিরপুরী দিয়ে যাচ্ছিল, আর যাকে ঘিরে দুর্ভাগ্যজনক দাঙ্গা হয়েছিল, সেই মিছিল পুলিশের অনুমতি ছাড়াই আয়োজন করা হয়েছিল।'
একইসঙ্গে আদালত আরও জানিয়েছে, এফআইআর থেকেই স্পষ্ট ইনস্পেক্টর রাজীব রঞ্জনের নেতৃত্বে জাহাঙ্গিরপুরী থানার কর্মী ও আধিকারিকরা বেআইনি মিছিলটিকে থামানোর কোনও চেষ্টাই করেননি। বরং, তাঁরা ওই পথে সেই ‘অবৈধ মিছিলের সঙ্গে’ই ছিলেন। বিচারক বলেন, ‘এফআইআরে স্পষ্টই দেখা যাচ্ছে যে, স্থানীয় পুলিশ প্রথমেই ওই বেআইনি মিছিলটি থামাতে ও ভিড়কে ছত্রভঙ্গ করতে পারতেন। কিন্তু, তাঁরা সেই দায়িত্ব পালন করার পরিবর্তে, পুরো রুটে মিছিলের সঙ্গে ছিলেন। যা পরবর্তীতে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে দুর্ভাগ্যজনক দাঙ্গার চেহারা নেয়।’
এরপরেই বিচারক গগনদীপ সিং এক নির্দেশে দিল্লি পুলিশকে বলেছেন, 'ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের কোনও ঘটনা না-ঘটে এবং পুলিশ বেআইনি কর্মকাণ্ড রোধে আত্মতুষ্ট না-হয়, সেজন্য সংশ্লিষ্ট পুলিশকর্তাদের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে হবে।' আর আদালতের নির্দেশমতো কী ব্যবস্থা নেওয়া হল, সেই ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য আদালতকে জানাতে হবে পুলিশকর্তাদের। সেই কারণে, নির্দেশনামার কপি দিল্লির পুলিশ কমিশনারকে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে আদালত।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন