আরজি কর কান্ডে সরাসরি প্রতিবাদ জানিয়ে তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়ালেন দলীয় সাংসদ জহর সরকার। রবিবারই তিনি এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়ে দলীয় সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। এর আগে আরজি কর কান্ডে একাধিকবার সুর চড়িয়েছেন দলীয় সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। যদিও আরজি কর কান্ডের প্রতিবাদে শাসকদলের এক সাংসদের ইস্তফা এই প্রথম। যা নিয়ে যথেষ্টই বিড়ম্বনা বাড়লো শাসক তৃণমূলের। যদিও এই খবর লেখা পর্যন্ত তাঁর এক্স (পূর্বতন ট্যুইটার) বায়োতে লেখা আছে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভা সাংসদ।
সংবাদমাধ্যমের কাছে জহর সরকারের যে চিঠি এসে পৌঁছেছে তাতে তিনি কার্যত মুখ্যমন্ত্রী সমালোচনাই করেছেন। তাঁর মতে, “এই আন্দোলনে পথে নামা মানুষেরা অরাজনৈতিক এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রতিবাদ করছেন। অতএব রাজনৈতিক তকমা লাগিয়ে এই আন্দোলনকে প্রতিরোধ করা সমীচীন হবেনা।” প্রসঙ্গত, এর আগে এই আন্দোলনকে বাম-বিজেপির আন্দোলন বলে তকমা দিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই দাবিকেই এদিন কার্যত নস্যাৎ করে দিয়েছেন দলীয় সাংসদ জহর সরকার।
চিঠিতে তৃণমূল সাংসদ আরও লিখেছেন, “সংসদে নির্বাচিত হবার এক বছর পরে, যখন ২০২২ সালে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর চূড়ান্ত দুর্নীতির খোলাখুলি প্রমাণ দেখে প্রকাশ্যে মতামত দিই যে দল ও সরকারের এই ব্যাপারে অত্যন্ত সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন, তখন দলের অনেক বর্ষীয়ান নেতা আমাকে হেনস্থা করেন।”
আরজি কর কান্ড প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ তাঁর চিঠিতে লিখেছেন, “আমার এত বছরের জীবনে এমন ক্ষোভ ও সরকারের প্রতি সম্পূর্ণ অনাস্থা আগে কখনও দেখিনি। এমনকী যখন সরকার তথ্যমূলক বা সত্য কোনও বক্তব্যও মানুষের সামনে রাখছে, তাঁরা একেবারেই বিশ্বাস করছেন না। আমি গত একমাস ধরে ধৈর্য ধরে আরজি কর হাসপাতালের ঘৃণ্য ঘটনার বিরুদ্ধে সবার প্রতিক্রিয়া দেখেছি আর ভেবেছি আপনি কেন সেই পুরোনো মমতা ব্যানার্জির মত ঝাঁপিয়ে পড়ে সরাসরি জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলছেন না। এখন সরকার যে সব শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে তা এক কথায় অতি অল্প এবং অনেক দেরি হয়ে গেছে।”
এই চিঠির শেষে তিনি লিখেছেন, “আমার বক্তব্য লিখিতভাবে জানাতে বাধ্য হলাম কারণ দীর্ঘদিন আপনার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে দেখা বা আলাপ আলোচনা করার সুযোগ পাইনি।” “কিন্তু আমি আর সাংসদ থাকতে চাই না।” “আমি আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই দিল্লিতে গিয়ে রাজ্যসভার সভাপতির হাতে আমার পদত্যাগপত্র জমা দেব এবং রাজনীতি থেকে সম্পূর্ণভাবে বিদায় নেব।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন