প্লাবিত দক্ষিণবঙ্গের একাংশ। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার বন্যা বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে ৭২ ঘন্টার জন্য ঝাড়খণ্ড বর্ডার বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই নির্দেশ মেনে বৃহস্পতিবার রাত থেকে সিল করে দেওয়া হল আসানসোল-ঝাড়খণ্ড বর্ডার। যার ফলে গতকাল থেকে সীমানায় আটকে রয়েছে পণ্যবাহী গাড়ি। বিপাকে গাড়ির চালকরা।
দক্ষিণবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে প্রথম থেকে ডিভিসিকে দুষছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঝাড়খণ্ড সরকার এবং পাশাপাশি কেন্দ্রের বিরুদ্ধেও তোপ দেগেছেন তিনি। এই বন্যাকে প্রথম থেকে ‘ম্যান মেড’ বলে অভিযোগ করে আসছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার পাঁশকুড়ায় বন্যা বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, আগামী ৭২ ঘন্টার জন্য বন্ধ থাকবে ঝাড়খণ্ড বর্ডার।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬ টায় সিল করে দেওয়া হয় আসানসোল-ঝাড়খণ্ড সীমানার ৫টি নাকা পয়েন্ট বা বর্ডার। ধানবাদ-আসানসোলের সংযোগকারী কল্যাণেশ্বরী-ডুবুডিহি চেকপোস্ট, বরাকর নদের উপর চিরকুণ্ডা-বরাকর চেকপোস্ট, ঝাড়খণ্ডের নলা-বারাবনির উপর রুনাকুড়া ঘাট, জামতাড়া-রূপনারায়ণপুর চেকপোস্ট ও মাইথন ড্যাম পেরিয়ে কল্যাণেশ্বরী রোডের নাকা চেকপোস্ট আটকে দেয় পুলিশ।
পণ্যবাহী গাড়ি আটকে দেওয়া হয় বা ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। যার ফলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে সীমানায় আটকে আছে গাড়িগুলি। সিমলা থেকে আসছে আপেল, পাঞ্জাব থেকে আসছে নাসপাতি, দিল্লি থেকে আসছে সেনা ক্যাম্পের জন্য প্যাকেটবন্দি খাবার। সব আটকে আছে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়ক ডুবুডি চেকপোস্টে। এ প্রসঙ্গে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশের ডিসি হেড কোয়ার্টার অরবিন্দ কুমার আনন্দ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনেই বর্ডার সিল করা হয়েছে।”
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শুধুমাত্র পণ্যবাহী গাড়ি আটকে রাখা হয়েছে। জরুরী পরিষেবার এবং যাত্রীবাহী গাড়ি ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। যদিও, চালকদের অভিযোগ, জরুরী পরিষেবার গাড়িও ছাড়া হচ্ছে না।
এব্যাপারে রাজস্তানের জয়পুর, বিহারের ভাগলপুর থেকে আসা লরি চালকরা জানান, তাঁরা কেউ যাচ্ছিলেন কলকাতা কেউ বা মেদিনীপুর। কেন ডুবুডি চেকপোস্টে আটকে পড়লেন তাঁদের জানা নেই। ট্রাক চালক নীরজ কুমার শর্মা বলেন, "এখানে এই চেকপোস্টে আমাদেরকে আটকে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, বাংলায় বন্যা হয়েছে। তাই ফিরে যাচ্ছি। যে ক্ষতি হয়েছে তার দাম কে দেবে জানি না।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন