প্রায় ৩০ বছর পর ফের দলিত প্রেসিডেন্ট পেল দিল্লির জওহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটি বা জেএনইউ-র ছাত্র সংগঠন। অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের (এবিভিপি) প্রার্থী উমেশ সি আজমিরাকে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন বাম ছাত্র সংগঠনের ধনঞ্জয়।
দেশের অন্যতম সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জেএনইউ-র ছাত্র সংগঠনের ভোটে ফের একবার উড়েছে লাল পতাকা। রবিবার রাতে গণনা শেষে দেখা যায়, আরএসএস-এর ছাত্র সংগঠন এবিভিপি-কে পর্যুদস্ত করে জেএনইউ-তে লালদুর্গ অক্ষুণ্ণ রেখেছে বাম ছাত্র সংগঠনের যৌথ মঞ্চ।
সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা এআইএসএ প্রার্থী ধনঞ্জয় ভোট পেয়েছেন ২,৫৯৮টি। এবিভিপি-র উমেশ সি আজমিরা পেয়েছেন ১,৬৭৬ ভোট। ১৯৯৬-৯৭ সালে শেষ দলিত সভাপতি পেয়েছিল জেএনইউ ছাত্র সংগঠন। বট্টি লাল বৈরওয়ার সেবার সভাপতি হয়েছিলেন।
বিহারের গয়ার বাসিন্দা ধনঞ্জয় জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কুল অফ আর্টস অ্যান্ড অ্যাসথেটিক্সে পিএইচডি করছেন। খুব ছোট থেকেই জাতপাত, বর্ণবৈষম্যকে কাছ থেকে দেখেছেন তিনি। তাঁর বাবা একজন পুলিশকর্মী, বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত। সমাজে তাঁর পরিবারকে মান্যতা দেওয়া হয়নি কখনই। ছোট থেকেই পড়াশোনায় অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন তিনি। তাঁর বাবা চাইতেন তিনি ইজ্ঞিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হন। কিন্তু অর্থনৈতিক অসচ্ছ্বলতার কারণে তা সম্ভব হয়নি।
ধনঞ্জয়ের প্রচারে তাই এই দিকটি উঠে এসেছে। উচ্চশিক্ষায় ফি বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। এজেন্সি লোন নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। ক্যাম্পাসে জল, স্বাস্থ্য ও পরিকাঠামো সংক্রান্ত নানা সুবিধাকে আরও বৃদ্ধি করার দাবি তিনি তোলেন।
এআইএসএ-র প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, যেভাবে ধনঞ্জয়কে বর্ণবৈষম্যর মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে, সেটাই তাঁর জীবনে লড়াইয়ের আগুনকে আরও জ্বালিয়ে দিয়েছিল।
জয়ের পর সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে ধনঞ্জয় বলেন, “এই জয় জেএনইউ-এর ছাত্রদের গণভোট, যারা ঘৃণা ও সহিংসতার রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। শিক্ষার্থীরা আবারও আমাদের প্রতি তাদের আস্থা দেখিয়েছে। আমরা তাঁদের অধিকারের জন্য লড়াই চালিয়ে যাব। তাঁদের যে যে বিষয়ে সমস্যা রয়েছে তা নিয়ে কাজ করব ৷"
ছাত্র সংসদের অন্যান্য তিনটি পদেও জয়ী হয়েছেন বাম ছাত্র সংগঠনের প্রার্থীরা। সহ-সভাপতি পদে জয়ী হয়েছেন বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই প্রার্থী অভিজিৎ ঘোষ। তিনি পেয়েছেন ২৪০৯টি ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে ২৮৮৭টি ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন বাম সমর্থিত প্রার্থী প্রিয়ংশী আর্য। ২৫৭৪টি ভোট পেয়ে যুগ্ম সম্পাদক পদে জয়ী হয়েছেন বাম প্রার্থী মহম্মদ সাজিদ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন