উত্তরপ্রদেশের রায়বেরেলিতে অমিত শাহের জনসভা চলাকালীন এক সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগ উঠল বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে। জানা গেছে, টাকার বিনিময়ে শাহের সভায় গ্রামের মহিলাদের নিয়ে আসার কথা জানতে চাওয়াতেই তাঁকে নিগ্রহের শিকার হতে হয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ওই সাংবাদিক।
রবিবার উত্তরপ্রদেশের রায়বেরেলিতে নির্বাচনী জনসভা ছিল অমিত শাহের। ওই দিন দিল্লি থেকে রায়বেরেলিতে সেই জনসভা কভার করতে গিয়েছিলেন ২৭ বছর বয়সী সাংবাদিক রাঘব ত্রিবেদী। তিনি ইউটিউব বেস সংবাদ মাধ্যম ‘মিলিটিক্স’ –এ কর্মরত।
রাঘব জানিয়েছেন, শাহের জনসভা চলাকালীন গ্রামের কিছু মহিলা সভা ছেড়ে চলে যাচ্ছিলেন। কেন তাঁরা চলে যাচ্ছেন তা জানতে চাইলে ওই মহিলারা জানান, তাঁদেরকে ১০০ টাকা দিয়ে মোদীর সভা বলে নিয়ে আসা হয়েছিল। কিন্তু মোদী আসেননি। তাঁরা অমিত শাহকে চেনেন না।
রাঘব জানিয়েছেন, ওই মহিলাদের বক্তব্যের বিষয়ে সভায় উপস্থিত বিজেপির কিছু কর্মীকে জিজ্ঞাসা করলে প্রথমে তারা অস্বীকার করেন। পরে ভিডিও দেখালে তাঁকে একটি জায়গায় ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বিজেপি কর্মীরা সেই ভিডিওটি ডিলিট করতে বললে, তিনি রাজি হননি। এরপর বিজেপি কর্মীরা রাঘবকে বেধড়ক মারধর করেন। জ্ঞান হারান তিনি। পরবর্তীতে রাঘবের সহকর্মীরা তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
মহিলাদের সাক্ষাৎকারের ভিডিওটি এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে রাঘব লিখেছেন, “এটি সেই ভিডিয়ো ক্লিপ যা বাঁচাতে গিয়ে আমাকে অমিত শাহের সমাবেশে গণপ্রহারের শিকার হতে হয়েছিল, এটি সেই ক্লিপ যা ‘৪০০ পার’-এর ফাঁপা দাবির সত্যতাকে সামনে নিয়ে আসে, সেই বিজেপি বন্ধুরা যাঁরা আমাকে মারছিলেন, তাঁরা এই ক্লিপটি চেয়েছিলেন।“ (যদিও সেই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি পিপলস রিপোর্টার)
এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই বিজেপির ছ’জন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন রাঘবের ক্যামেরাম্যান সঞ্জীত সাহনি। তাঁদের বিরুদ্ধে ১৪৭, ৩২৩ এবং ৫০৪ ধারায় মামলা রজু করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত শুরু হয়েছে। এখনও কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি।
অন্যদিকে, এদিন রাঘবকে দেখতে জেলা হাসপাতালে আসেন ছত্তিশগড়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা ভূপেশ বাঘেল। বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে তিনি এই ঘটনাকে ‘গণতন্ত্রের উপর সরাসরি আক্রমণ’ বলে অভিহিত করেন।
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব, কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা সহ একাধিক বিরোধী নেতৃত্ব। অখিলেশের কথায়, ‘‘এটাই উত্তরপ্রদেশের আইনশৃঙ্খলা। সহিংস পরিবেশ তৈরি করে জিততে চায় বিজেপি।’’ প্রিয়ঙ্কা বলেছেন, ‘‘তাদের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলা বিজেপি সহ্য করতে পারে না। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে মানুষের কণ্ঠস্বর ওরা স্তব্ধ করতে চায়।’’
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন