কয়েকমাস আগে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সোমবার, সেই সাক্ষাৎকার নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে হলফানামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আগামী শুক্রবারের মধ্যে এই হলফনামা জমা দিতে হবে। ওই দিনই এ নিয়ে পরবর্তী শুনানি হবে।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এ নিয়ে তোলপাড়ও হয়েছে রাজ্য। কিন্তু, গত সেপ্টেম্বর মাসে টেলিভিশন চ্যানেলে তিনি যে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় - কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়।
এদিন, প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি পি এস নরসিমার বেঞ্চ জানায়, ‘টিভি চ্যানেল এবিপি আনন্দে দেওয়া বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একটি সাক্ষাত্কারের অনুবাদের কপি আদালতে জমা দিয়েছেন আবেদনকারী (টিএমসি নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়)। তিনি (বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়) সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন কিনা, দিলে তাঁর বিষয়বস্তু কী ছিল - তা স্পষ্ট করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে। বৃহস্পতিবার বা তার আগে আদালতে এই হলফনামা দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। শুক্রবার, আমরা এটি তালিকাভুক্ত করব।’
এক পর্যবেক্ষণে বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, ‘আমি বলতে চাই, বিচারাধীন মামলায় সাক্ষাৎকার দেওয়া বিচারপতিদের কাজ নয়।’
তিনি জানান, ‘যদি বিচারাধীন মামলা নিয়ে কোনও সাক্ষাৎকার দিয়ে থাকেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, সেক্ষেত্রে তিনি ওই মামলার শুনানি করার অধিকার হারিয়েছেন। সেই ক্ষেত্রে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে ওই মামলার শুনানির জন্য নতুন বিচারপতি নিয়োগ করতে হবে।‘
সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সাক্ষাতকারের বিষয়টি তুলে ধরেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি। তারপরেই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বলেন, 'ওই সাক্ষাৎকারে কী রয়েছে, তা আমাদের দেখা দরকার।‘
উল্লেখ্য, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত বহিষ্কৃত যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের চিঠি মামলায় হাই কোর্টের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। হাই কোর্টের বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশনামায় বলা হয়েছিল, কুন্তল ঘোষের চিঠির বিষয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রয়োজনে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা।
এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন অভিষেক। সেই নির্দেশেও অন্তর্বর্তিকালীন স্থগিতাদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার ছিল ওই মামলার শুনানি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন