কর্ণাটক ঘুষ কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত বিজেপি বিধায়ক মাদল বিরুপাক্ষপ্পার বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিশ জারি করলো লোকায়ুক্ত। তাঁর হয়ে তাঁর সরকারি কর্মচারী ছেলে ৪০ লক্ষ ঘুষ নেওয়ার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েছিলেন। এরপর থেকে পলাতক রয়েছেন ওই বিধায়ক।
লোকায়ুক্ত সূত্রের খবর, তারা জানতে পেরেছে যে বিরুপাক্ষপ্পা তাঁর গ্রেফতারি এড়াতে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। তাঁর বিদেশ যাওয়া আটকাতে লুক আউট জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে লোকায়ুক্ত। দেশের সব বিমানবন্দরে লুকআউট নোটিশ পাঠানো হবে।
অন্যদিকে, নিজের গ্রেফতারি এড়াতে সোমবার হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেছেন বিজেপি বিধায়ক। বিধায়কের আইনজীবী সন্দীপ জরুরী ভিত্তিতে বিষয়টি শুনানির জন্য আদালতে অনুরোধ করেন। আদালত আবেদনটি গ্রহণ করলেও, বিচারপতি কে. নটরাজনের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ মঙ্গলবার (৭ মার্চ) পর্যন্ত শুনানি স্থগিত করেছে।
যদি আদালত জামিনের আবেদন প্রত্যাখ্যান করে, তাহলে বিজেপি বিধায়ক বিরুপাক্ষপ্পাকে গ্রেপ্তার করবে লোকায়ুক্ত, যা আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যে ক্ষমতাসীন বিজেপিকে তীব্র সমস্যায় ফেলবে। ইতিমধ্যেই ঘুষ কাণ্ডে বিজেপি বিধায়কের ছেলেকে গ্রেফতার, এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে বিধায়কের নাম উঠে আসা এবং তাঁর বাড়ি থেকে ৮ কোটি নগদ উদ্ধারের ঘটনায় অস্বস্তিতে পদ্ম শিবির।
লোকায়ুক্ত ট্র্যাপ মামলায় প্রধান অভিযুক্ত বিধায়ক মাদল বিরুপাক্ষপ্পা। গত বৃহস্পতিবার তাঁর ছেলে প্রশান্ত মাদল, যিনি বেঙ্গালুরু ওয়াটার সাপ্লাই অ্যান্ড সুয়ারেজ বোর্ডের চিফ অ্যাকাউন্টেন্ট, ৪০ লক্ষ টাকা ঘুষ নেওয়ার সময় লোকায়ুক্তের হাতে ধরা পড়েন। পাবলিক সেক্টর কোম্পানি কর্ণাটক সোপস অ্যান্ড ডিটারজেন্টস লিমিটেড (কেএসডিএল), যা বিখ্যাত 'মৈশূর স্যান্ডেল সোপ' তৈরি করে, তাদের কাঁচামাল সরবরাহের জন্য দরপত্র বরাদ্দের জন্য ৮০ লক্ষ টাকা ঘুষ দাবি করেছিলেন প্রশান্ত।সেই ঘুষেরই অংশ হিসেবে অফিসে ৪০ লক্ষ টাকা নেবার সময় ধরা পড়েন তিনি। মাদল বিরুপাক্ষপ্পা কেএসডিএল-এর চেয়ারম্যান। ছেলে ধরা পড়ার পরই চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। সেই থেকেই পলাতক তিনি। ডেপুটি পুলিশ সুপার পদমর্যাদার অফিসারদের অধীনে অভিযুক্ত বিধায়ককে গ্রেপ্তারের জন্য সাতটি দল গঠন করেছে লোকায়ুক্ত।
অভিযুক্ত বিধায়ক মাদল বিরুপাক্ষপ্পা এবং প্রশান্ত মাদলের বাড়ি থেকে ৮.১২ কোটি টাকা এবং ১.৬ কেজি সোনা বাজেয়াপ্ত করেছে লোকায়ুক্ত।
বিধায়কের অন্য এক ছেলে মল্লিকার্জুন মাদলকেও একটি নোটিশ জারি করেছে লোকায়ুক্ত। লোকায়ুক্তের তল্লাশির দিনেই তাঁর দুটি কোম্পানির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ৯৪ লক্ষ টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করেছেন তিনি। এই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মল্লিকার্জুন মাদলকে নোটিশ পাঠিয়েছে লোকায়ুক্ত।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন