কর্ণাটকে সপ্তাহান্তে এবং রাতের কারফিউর বিরুদ্ধে বিজেপির অন্দরেই শোরগোল ক্রমশ জোরালো হচ্ছে। বিজেপির সিনিয়র নেতারা প্রকাশ্যে বিধিনিষেধের বিরোধিতা করছেন৷ মঙ্গলবার, বিজেপির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক সিটি রবি এবং বনমন্ত্রী উমেশ কাট্টি বলেছেন যে তারা রাজ্যে সপ্তাহান্তে কারফিউ এবং লকডাউনের বিরোধী।
চিকমাগালুরের বিধায়ক সিটি রবি জানিয়েছেন, তিনি সপ্তাহান্তে কারফিউ এবং লকডাউনের বিরুদ্ধে। কোভিড সংক্রমণ এখন বাড়ছে না। শুধুমাত্র কর্ণাটকে সংক্রমণ বাড়ছে এমনটা নয়। দিল্লি এবং মুম্বাইতেও কোভিড সংক্রমণের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কর্ণাটকে সংক্রমণ বাড়লেও মৃত্যুর হার খুবই কম। আইসিইউতে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যাও খুবই কম। এটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়লেও প্রাণহানি ঘটেনি। কাজেই আতঙ্কিত হওয়ার দরকার নেই। তবে সংক্রমণের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। লকডাউন এবং কারফিউ আরোপ করার পরিবর্তে, সরকারের উচিত নির্দেশিকা এবং নিয়ম তৈরি করা।
তাঁর মতে, এই নিয়মগুলির দ্বারা সাধারণ নাগরিকদের পর্যবেক্ষণ করা যেতে পারে এবং কোভিডের বিস্তারকে নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। যেহেতু তৃতীয় ঢেউয়ে কোনো প্রাণহানি নেই, তাই চিন্তার কোনো প্রয়োজন নেই। "কেন লকডাউন আরোপ করে মানুষকে স্বাচ্ছন্দ্য আটকানো হচ্ছে? যদি রেকর্ড যাচাই করা হয়, তবে মৃত্যুর শতাংশ খুবই কম। কেন কেউ এটা নিয়ে বেশি চিন্তিত হবেন? যারা সম্পূর্ণ টিকা নিয়েছেন তাদের কোন ক্ষতি হয়নি।”
তিনি আরও বলেছেন, এর আগের দুই লকডাউনের কঠিন পর্যায় পেরিয়ে মানুষ তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফেরার চেষ্টা করছে। এখন কেন তাঁদের কষ্ট দেওয়া হবে? পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং অপেক্ষা করার এবং দেখার নীতি গ্রহণ করতে হবে। এটা আমার মতামত। ডাক্তারদের মতামতও আমার মতই। কারফিউ এবং লকডাউন মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলবে।
বনমন্ত্রী উমেশ কাট্টি জানিয়েছেন, সরকার লকডাউন না করার সিদ্ধান্ত নিলে তিনি এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাবেন। মানুষের উচিত কোভিড নির্দেশিকা মেনে চলা এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা অনুসরণ করা। সাধারণ মানুষ যদি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা অনুসরণ করে, তাহলে লকডাউন আরোপ করার দরকার নেই। জনগণেরও জমায়েত এবং উৎসব এড়িয়ে চলা উচিত।
বিরোধী কংগ্রেস কর্ণাটকে সপ্তাহান্তে কারফিউ এবং রাতের কারফিউ তুলে নেওয়ার জোরালো দাবি তুলেছে। বিরোধী দল ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারকে অমানবিক বলে অভিহিত করেছে। রাজস্ব মন্ত্রী আর অশোক ঘোষণা করেছেন যে, সপ্তাহান্তে এবং রাতের কারফিউ শিথিল করার বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কারণ বিশেষজ্ঞরা মতামত দিয়েছেন যে কোভিড মহামারী ২৪ শে জানুয়ারির মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে যাবে।
সপ্তাহান্তে এবং রাতে কারফিউ আদেশ তুলে নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী অশোক মন্তব্য বলেন, তারা শুধুমাত্র সমাজের একটি অংশের স্বাচ্ছন্দ্যে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে সরকার দায়বদ্ধ, তাই বিশেষজ্ঞ কমিটির পরামর্শ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন