কেন্দ্রীয় সরকারের আদেশ না মানায় টুইটারকে ৫০ লক্ষ টাকা জরিমানা করল কর্ণাটক হাইকোর্ট। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এলন মাস্কের কোম্পানির করা আবেদন শুক্রবার খারিজ করে দিল হাইকোর্ট।
গত বছর টুইটারকে বেশ কয়েকটি আপত্তিজনক টুইট মুছে দেওয়ার ও টুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু টুইটার সেই নির্দেশ না মেনে কর্ণাটক হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। আদালতে বিদেশি সমাজমাধ্যম কোম্পানিটির দাবি ছিল, সরকারি ক্ষমতা প্রয়োগ করে টুইটারকে কয়েকটি অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। শুধুমাত্র ‘আপত্তিকর’ টুইট করার যুক্তিতে কোনও টুইটার ব্যবহারকারীর ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে পারে না সরকার।
গত ২৩ মে এই মামলার শেষ শুনানি হয়ে গেলেও শুক্রবার এই মামলার রায় দেয় বিচারক কৃষ্ণা দীক্ষিতের সিঙ্গেল ডিভিশন বেঞ্চ। টুইটারের তরফে নাগরিকদের ব্যক্তি স্বাধীনতা ও বাকস্বাধীনতার যে দাবি করা হয়েছিল, এদিন আদালত তা খারিজ করে দেয়। বরং সরকারের নির্দেশ না মেনে আদালতে যাওয়ায় কোম্পানিকে ৫০ লক্ষ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। বারবার নোটিশ পাঠানোর পরেও ভারতের তথ্য ও প্রযুক্তি আইনের নিয়মানুযায়ী সরকারের নির্দেশ মানতে দেরি করার কোনও উপযুক্ত কারণ দর্শাতে পারেনি টুইটার। এদিন আদালত সাফ জানিয়েছে, মতপ্রকাশ ও ব্যক্তি স্বাধীনতা সংক্রান্ত যে সাংবিধানিক অধিকার একজন ভারতীয় নাগরিক পান, তা একটি বিদেশি কোম্পানি হিসেবে টুইটারের প্রাপ্য নয়।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে দিল্লি সীমান্তের কাছে কৃষক আন্দোলনের সময় টুইটারকে বেশ কয়েকটি ‘আপত্তিজনক’ টুইট ও টুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধের নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। এই টুইটগুলিতে কখনও ‘ভারত অধিকৃত কাশ্মীর’ ব্যবহার করা হয়েছে, আবার কখনও জয়জয়কার করা হয়েছে এলটিটিই নেতা ভেলুপিল্লাই প্রভাকরণের। সরকারের তরফে এই টুইটার অ্যাকাউন্টগুলি ‘ব্যান’ করে দেওয়ার স্পষ্ট নির্দেশ না মেনেই ২০২২ সালে এলন মাস্কের হাতে কোম্পানির দায়ভার হস্তান্তর হওয়ার পর কর্ণাটক হাইকোর্টের দারস্থ হয়েছিল বিদেশি সমাজমাধ্যম কোম্পানিটি। যদিও বিদেশি কোম্পানি হিসেবে সমতার অধিকার নিয়ে টুইটারের করা আবেদন আদালতে ধোপে টেকেনি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন