প্রতিবেশীদের খৃষ্টধর্মে দীক্ষিত করছেন, এই অভিযোগে এক দলিত পরিবারের মহিলার গায়ে গরম ডাল ঢেলে দিল হিন্দুত্ববাদীরা। শুধু তাই নয়, বাড়ি ঢুকে তিন মহিলা-সহ পরিবারে পাঁচ জন সদস্যকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। গত ২৯ ডিসেম্বর ঘটনাটি ঘটে কর্নাটকের গোকাক জেলার বেলগাভি তালুকের তুক্কনাটটি গ্রামে। আক্রান্তরা এখনও চিকিৎসাধীন হাসপাতালে। পুলিশ এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
প্রসঙ্গত, বড়দিনের উৎসবের মাঝেই সাংসদ যুবনেতা তেজস্বী সূর্য নিদান দিয়েছিলেন, অন্য ধর্মাবলম্বীদের হিন্দুধর্মের রূপান্তরিত করতেই হবে। তাঁর এই বক্তব্যে বিতর্ক তৈরি হওয়ায় পরে তিনি ক্ষমা চেয়ে নেন ঠিকই। কিন্তু বিতর্ক থামেনি। একের পর এক খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের উপর আক্রমণের অভিযোগ উঠেছে।
ঠিক কী ঘটেছিল ওইদিন? জানা গিয়েছে, যাজক অক্ষয় কুমার কারাগানভি বাসভবনের প্রার্থনা সভা চলাকালীন হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সাতজন দুষ্কৃতী হামলা চালায়। তাদের অভিযোগ, অক্ষয় কুমার প্রতিবেশী অন্য ধর্মাবলম্বীদের খ্রিস্ট ধর্মে রূপান্তরিত করতে চায় বলে বাইবেল পাঠ সভার আয়োজন করেছে। তাঁদের গালিগালাজও করা হয়। মহিলাদের যৌন কর্মী বলে সম্বোধন করা হয়।
অক্ষয়ের স্ত্রীর অভিযোগ, হামলাকারীদের মধ্যে একজন পারাসাপ্পা ফুটন্ত ডাল ঢেলে দেয় এক মহিলা সদস্যের গায়ে। ডালের পাত্র দিয়ে তাঁকে মারধর করা হয়। অন্য অভিযুক্তরা হল শিবানন্দ গোতুর, রমেশ দণ্ডপুর, পারাসাপ্পা বাবু, ফকিরাপ্পা বাগেওয়াদি, কৃষ্ণা কানিতকর। সবাই তুক্কানাত্তি গ্রামের বাসিন্দা। অক্ষয়ের অভিযোগ, গালিগালাজ করে হামলাকারীদের বক্তব্য, তাঁরা জুতো তৈরি করে, শৌচালয় পরিষ্কার করে, তাই তাঁরা জন্মগতভাবেই হিন্দুধর্মের বিরুদ্ধাচারণ করবে।
গত ২৮ ডিসেম্বরেও আর একটি পরিবারের উপর হিন্দুত্ববাদীরা হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে। তাঁরা নিজেদের বাড়িতেই বড়দিনের উৎসব পালন করছিলেন। গত নভেম্বর এক দলিত খ্রিস্টান পাদ্রিকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। গত বছর জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩৭টি এরকম হামলার ঘটনা ঘটেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন