কে. চন্দ্রশেখর রাওয়ের নেতৃত্বাধীন তেলেঙ্গানার বিআরএস সরকারকে ‘বিজেপির আত্মীয়’ বলে প্রকাশ্য জনসভা থেকে কড়া ভাষায় বিঁধলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। বিআরএস-কে বিজেপির ‘বি টিম’ হিসেবেও সম্বোধন করেন তিনি।
রবিবার তেলেঙ্গানার খাম্মামে প্রদেশ কংগ্রেসের সমাবেশ থেকে এভাবেই চাঁচাছোলা ভাষায় কেসিআর সরকারকে আক্রমণ করেন রাহুল। এদিনের সমাবেশে রাহুল-সহ তেলেঙ্গানার একাধিক প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের উপস্থিতিতে কংগ্রেসে যোগ দেন প্রাক্তন বিআরএস সাংসদ শ্রীনিবাস রেড্ডি।
তেলেঙ্গানায় আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে রবিবার খাম্মামে প্রদেশ কংগ্রেসের একটি জনসমাবেশে মঞ্চে ওঠার সময় উপস্থিত বিশাল সংখ্যক মানুষের গলায় সমস্বরে ‘পি এম, পি এম’ ধ্বনি শুনে মুচকি হাসতে দেখা যায় তাঁকে। মঞ্চে উঠেই তেলেঙ্গানার বিআরএস সরকার ও মুখ্যমন্ত্রী কে. চন্দ্রশেখর রাওয়ের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দাগেন প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ।
রাহুল বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী কে. চন্দ্রশেখর রাও তাঁর দলের নাম পরিবর্তন করে বিআরএস রেখেছেন, যার আসল অর্থ ‘বিজেপি রিস্তেদার সমিতি’। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাতেই চন্দ্রশেখর রাও ও তাঁর সরকারের রিমোট কন্ট্রোল রয়েছে।” তেলেঙ্গানাবাসীর উদ্দেশে রাহুলের আরও বক্তব্য, “আপনাদের মুখ্যমন্ত্রী নিজেকে রাজা ভাবেন আর এই তেলেঙ্গানা রাজ্য তাঁর রাজত্ব।”
এদিন চন্দ্রশেখর রাওয়ের সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে রাহুল জানান, “আমার ঠাকুমা ইন্দিরা গান্ধী যে জমি তেলেঙ্গানার পিছিয়ে পড়া সংখ্যালঘু মানুষদের দিয়েছিলেন, টিআরএস তা কেড়ে নিয়েছে। এই জমি চন্দ্রশেখর রাওয়ের নয়, এই জমি আপনাদের। কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে এই জমি আপনাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। চন্দ্রশেখর রাও অনেক দুর্নীতি করেছেন। শুধুমাত্র কালেশ্বরম প্রকল্প থেকেই উনি এক লক্ষ কোটি টাকা সরিয়েছেন। এতদিন ধরে রাজ্যের সমস্ত প্রকল্প থেকে উনি চুরি করেছেন। রাজ্যের গরীব, কৃষক, শ্রমিক, দলিত-সহ পিছিয়ে পড়া মানুষের সম্পদ ছিনিয়ে নিয়েছেন উনি।”
আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে তেলেঙ্গানার মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে কর্ণাটকে সদ্য জয়ের প্রসঙ্গ টেনে প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ বলেন, “কিছুদিন আগেই আমরা দুর্নীতিগ্রস্ত কর্ণাটক সরকারের বিরুদ্ধে লড়ে জয়লাভ করেছি। বিজেপি ও তাদের প্রভাবশালী কিছু বন্ধুর বিরুদ্ধে আমাদের সঙ্গে রাজ্যের কৃষক, শ্রমিক-সহ সমস্ত গরীব মানুষ একজোট হয়েছিলেন। এবার তেলেঙ্গানাতেও এমনটাই হতে চলেছে।”
কিছুদিন আগেই ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি বিরোধী ‘মহাজোট’-এর লক্ষ্যে বিহারের পাটনায় বৈঠক করে দেশের ১৬টি বিরোধী দল। সেই বৈঠকে যোগ দেয়নি চন্দ্রশেখরের বিআরএস। এই প্রসঙ্গে রাহুল গান্ধী জানান, “সবাই বলেছিল বিআরএস-কে ডাকতে। কিন্তু আমরা স্পষ্ট বলে দিয়েছি, বিরোধী জোটে যদি বিআরএস-কে ডাকা হয় তাহলে আমরা সেই বৈঠকে যোগ দেব না। আমরা প্রথম থেকেই বিজেপির বিরুদ্ধে সরব ছিলাম, এখনও আছি। তাই বিজেপির ‘বি টিম’ বিআরএস-এর সঙ্গে আমরা কোনও বৈঠকে বসে সমঝোতা করব না।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন