কেরালার নবগঠিত মন্ত্রীসভা থেকে বাদ পড়লেন বিদায়ী মন্ত্রীসভার স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শৈলজা। গতবছর করোনা ভাইরাস সংক্রমণের তাঁর কর্মপদ্ধতি আন্তর্জাতিক স্তরে নজর কেড়েছিলো। রাজ্যে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিধানসভা নির্বাচনেও তিনি সর্বাধিক ব্যবধানে জয়লাভ করেছিলেন।
কেরালার নবগঠিত মন্ত্রীসভায় একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন ছাড়া বিগত মন্ত্রীসভার আর কোনো সদস্য নেই। এই প্রসঙ্গে সিপিআই(এম) সূত্রে জানানো হয়েছে - এটা আমাদের দলীয় সিদ্ধান্ত এবং একমাত্র আমাদের পার্টিই এই ধরণের সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
দলের এই সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে কে কে শৈলজা জানিয়েছেন – এটা আমাদের দলের সিদ্ধান্ত এবং আমার এই বিষয়ে কোনো বক্তব্য নেই। তাছাড়া আমি একা নই। গতবারের কোনো মন্ত্রীকেই নতুন মন্ত্রীসভায় নেওয়া হয়নি। যদিও মন্ত্রীসভা থেকে কে কে শৈলজার বাদ পড়ার প্রতিবাদ আছড়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এমনকি কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুরও এই সিদ্ধান্তে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। যদিও কে কে শৈলজা সেই বিষয়ে মুখ খোলেননি।
গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ব্রিটিশ ম্যাগাজিন প্রস্পেক্ট-এর ‘টপ থিঙ্কার ২০২০’ বিভাগে শীর্ষস্থানে মনোনীত হয়েছিলেন কেরালার স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শৈলজা। ২০ হাজার পাঠকের ভোটে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ৫০ জন ‘টপ থিঙ্কার ২০২০’ বেছে নেয় এই ম্যাগাজিন। যাতে শীর্ষস্থান পান কেরালার বাম সরকারের তদানীন্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শৈলজা। এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থান পেয়েছিলেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জ্যাকিন্ডা আরডেন।
ওই পত্রিকার বক্তব্য অনুসারে – কে কে শৈলজাই এই সম্মানের যোগ্য। জানুয়ারি মাসে যখন কোভিড-১৯ কে সকলে চীনের সমস্যা বলে মনে করছিলো সেই সময় থেকে উনি বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ মেনে গুরুত্ব দিয়েছিলেন টেস্ট, ট্রেস এবং আইসোলেশনে। এর আগে দ্য গার্ডিয়ান সংবাদপত্রে কে কে শৈলজাকে ‘করোনাভাইরাস স্লেয়ার’ এবং ‘রক স্টার হেলথ মিনিস্টার’ বলে অভিহিত করা হয়েছিলো।
২০১৮-র নিফা ভাইরাস দমনে তাঁর কৃতিত্ব এবং ২০২০-র করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে তাঁর অক্লান্ত প্রচেষ্টার কথাও উল্লেখ করেছে ওই ম্যাগাজিন। ওই ম্যাগাজিনের নিবন্ধে বলা হয় – করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রথম থেকে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছেন কে কে শৈলজা। যে কারণে এখনও পর্যন্ত কেরালায় করোনা সংক্রমণ এবং মৃত্যু সংখ্যা নিয়ন্ত্রিত। ওই নিবন্ধে কেরালার সঙ্গে ব্রিটেনের তুলনা টেনে প্রশংসা করা হয় কেরলের।
এর এছাড়াও করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা গ্রহণের জন্য গত জুন মাসে রাষ্ট্রসংঘের পাবলিক সার্ভিস ডে-তে বক্তব্য পেশ করার জন্য কে কে শৈলজাকে বিশেষ আমন্ত্রণ জানানো হয়। যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন নেতৃত্বের সামনে কে কে শৈলজা এক ভার্চুয়াল সম্মেলনে জনস্বাস্থ্য বিষয়ে বক্তব্য রাখেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন