ভারতীয় সংবিধান সম্পর্কে কেরালার মন্ত্রী সাজি চেরিয়ানের "আপত্তিকর" মন্তব্যের একদিন পরে কংগ্রেস এবং বিজেপি তার পদত্যাগের দাবিতে সরব হয়। যার জেরে দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বুধবার জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। ইয়েচুরি বলেন, "কেরালার কমরেডরা এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করছেন এবং তারা যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।"
কেরালার সংস্কৃতি ও মৎস্য প্রতিমন্ত্রী চেরিয়ান রবিবার বলেছিলেন, ভারতীয় সংবিধান জনগণের "লুট" করার জন্য যথেষ্ট সুযোগ দেয়। যে মন্তব্যের পর একাধিক স্তর থেকে সিপিআই(এম)-এর বিরুদ্ধে সমালোচনা শুরু হয়।
মঙ্গলবার পাথানামথিট্টা জেলায় এক দলীয় সভায় সংবিধান প্রসঙ্গে চেরিয়ানের এই বক্তব্যের ভিস্যুয়াল প্রকাশ হওয়ার পরপরই, কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন বিরোধী দল এবং রাজ্যের বিজেপিও তার পদত্যাগের দাবিতে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু করে।
যার উত্তরে চেরিয়ান বলেন, তিনি সংবিধানের অবমাননা করতে চাননি। তিনি আরও বলেন, তাঁর মন্তব্যকে "ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে" এবং তিনি এর জন্য ক্ষমাপ্রার্থী।
প্রবল বিক্ষোভের জেরে বুধবার কেরালা বিধানসভার অধিবেশন দিনের জন্য স্থগিত হওয়ার সাথে সাথে, সিপিআই-এমের কেরালা ইউনিটের শীর্ষ পদাধিকারীরা এই নিয়ে আলোচনা করার জন্য জরুরি বৈঠকে বসেন।
বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসার সময় সাংবাদিকরা চেরিয়ানকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন,: "আমি কেন পদত্যাগ করব?"
অন্যদিকে রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি কে সুধাকরণ এই ঘটনাকে ‘লজ্জাজনক’ বলে অভিহিত করেন এবং বলেন, একজন মন্ত্রীর কাছ থেকে এমন বক্তব্য এসেছে। যা দুর্ভাগ্যজনক।
সুধাকরণ জানিয়েছেন, "কংগ্রেস আইনগতভাবে এর বিরোধিতা করবে এবং শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজ্যজুড়ে কংগ্রেস ভারতীয় সংবিধানকে সমর্থন করার অঙ্গীকার করবে।"
সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি এবং সাংবিধানিক বিশেষজ্ঞ কে টি থমাস এই ঘটনাকে একটি গুরুতর সমস্যা বলে জানিয়েছেন এবং বলেছেন, কেউ মামলা করলে মন্ত্রী অভিযুক্ত হবেন।
থমাস বলেন, "এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে তিনি চেরিয়ানকে মন্ত্রী রাখবেন কিনা। মন্ত্রীর জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। ভারতীয় সংবিধান ভারতীয়দের দ্বারা লেখা হয়েছে।"
দলের সিনিয়র সচিবালয় সদস্য ও মন্ত্রী এম ভি গোবিন্দন বুধবার সচিবালয়ের বৈঠকের পর বলেন, আগামীকাল সচিবালয়ের পূর্ণাঙ্গ বৈঠক হবে।
জানা গেছে, চেরিয়ানের মন্তব্যের বিরোধিতা করে সিপিআই(এম)-এর পক্ষ থেকে এক বিবৃতি দেওয়া হতে পারে।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন এই মুহূর্তে ঘটনাটিকে গুরুত্ব দিয়ে আইনগত পরামর্শ নিচ্ছেন। কারণ ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন আদালতে এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে একাধিক পিটিশন জমা পড়েছে।
- with inputs from IANS
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন