রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খানকে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য (Chancellor of Universities) পদ থেকে সরানোর জন্য অর্ডিন্যান্স (Ordinance) আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেরালার মন্ত্রীসভা (Kerala Cabinet)।
কেরালার রাজনীতিতে রাজ্যপাল আরিফ খানকে নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়। গত বিধানসভা নির্বাচনের পর একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করেছে রাজ্য সরকার। কোনও সংগত কারণ ছাড়াই তাতে আপত্তি জানান রাজ্যপাল আরিফ খান। এমনকি, আচার্য পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি।
বিষয়টি এখানেই থেমে নেই, সম্প্রতি কান্নুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক নিয়োগ নিয়েও বিবাদে জড়িয়েছেন কেরালার রাজ্যপাল। কান্নুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোপীনাথ রবীন্দ্রনকে ‘দুষ্কৃতী’ বলে আক্রমণ করেন তিনি।
এরপর, গত ২৪ অক্টোবর কেরলের ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান। এই বিষয়কে কেন্দ্র করেই রাজ্যপালের সঙ্গে কেরালার বাম সরকারের সংঘাত চরমে উঠেছে।
এই বিবাদের সূত্রপাত মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের ব্যক্তিগত সচিব কে.কে রাগেশের স্ত্রী প্রিয়া ভার্গিসকে সহকারী অধ্যাপক নিয়োগ ঘিরে। রাজ্যপাল অভিযোগ করেন, প্রিয়া বাম সরকারের ঘনিষ্ঠ। স্বজনপোষণ করতে, তাঁকে নিয়োগ দিতে চায় সরকার ও উপাচার্য গোপীনাথ।
এরপর থেকেই রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে বিবাদ তীব্র হয়। যার জেরে অর্ডিন্যান্স জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেরালার মন্ত্রিপরিষদ।
তবে, রাজ্যপাল আরিফ খানও চুপ থাকার ব্যক্তি নন। এই পরিস্থিতি তিনি কীভাবে সামাল দেন তা দেখার বিষয়।
জানা যাচ্ছে, রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে আচার্য পদে রাজ্যপালের জায়গায় কোনও অভিজ্ঞ শিক্ষাবিদকে বসাতে চায় বিজয়ন সরকার। তবে এই অর্ডিন্যান্সে লাগবে রাজ্যপালের স্বাক্ষর। তবেই তা বাস্তবায়িত করা সম্ভব হবে।
সূত্র মতে, বিজয়ন সরকারের এই অর্ডিন্যান্স আনার সিদ্ধান্তের পিছনে একটি কারণ আছে। তা হল, কয়েকদিন আগে ক্ষুব্ধ হয়ে রাজ্যপাল বলেছিলেন, এটা নির্দিষ্ট যে তাঁরই আচার্য হওয়া উচিত। তবে, সরকার যদি কোনও অর্ডিন্যান্স/বিল আনে, তাহলে আনন্দের সাথে তাতে স্বাক্ষর করবেন তিনি।
তবে, কেরালা সরকারের অর্ডিন্যান্স আনার এই সিদ্ধান্তের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছে বিরোধী দল কংগ্রেস। বিরোধী দলনেতা ভি ডি সাথিসান বলেন, কোনও অবস্থাতেই কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন বিরোধী দল এটিকে সমর্থন করবে না।
যুক্তি হিসাবে তিনি বলেন, 'এটি কেরালায় ঘটতে পারে না। কারণ, এটি যদি আইন হয়ে যায়, তাহলে উপাচার্যসহ কর্মী নিয়োগ সবকিছুই সিপিআই(এম)-এর দলীয় সদর দফতর থেকে করা হবে।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন