আর নয় 'স্যার বা ম্যাডাম' সম্বোধন। পঞ্চায়েত অফিসের ঊর্ধ্বতনকে ডাকতে হবে নামে বা পদ অনুযায়ী। এমনই ইতিহাস তৈরি হল উত্তর কেরলের পালাক্কাড জেলার মথুর গ্রামে। পঞ্চায়েতের পরিষেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষকে আধিকারিকরা জানিয়ে দিলেন যে, তাঁদের আর স্যার বা ম্যাডাম বলে সম্বোধন করতে হবে না। যার জেরে বদলে যাবে কর্ম-সংস্কৃতিই।
সম্প্রতি একটি বৈঠক করে পঞ্চায়েত বোর্ড এই সিদ্ধান্ত নেয় সর্বসম্মতভাবে। এরকম ঐতিহাসিক পদক্ষেপের কারণ কি? আধিকারিকরা জানান, সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের দূরত্ব কমানো, জনপ্রতিনিধি ও সরকারি আধিকারিকদের প্রতি মানুষের আস্থা বাড়ানোই লক্ষ্য। তাই পঞ্চায়েত অফিস চত্বরে আধিকারিকদের নাম বা পদ অনুযায়ী ডাকলেই চলবে। দেশের মধ্যে প্রথম গ্রাম পঞ্চায়েত হিসাবে স্যার-ম্যাডাম সম্বোধন বর্জন করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করল। পাশাপাশি অন্য পুর-পঞ্চায়েত অফিসের জন্যও বিষয়টি শিক্ষনীয় বটে।
অন্যদিকে আরও একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে এই পঞ্চায়েত। ১৬ সদস্যের কংগ্রেস পরিচালিত এই বোর্ডে সাতজন সিপিএম এবং একজন বিজেপি সদস্য রয়েছেন। তাঁরা সবাই রাজনৈতিক শত্রুতা ভুলে এই সিদ্ধান্তে সম্মতি দিয়েছেন। পঞ্চায়েত সদস্যরা বলেছেন, ঔপনিবেশিক অতীতের ভয়াবহ স্মৃতি ভুলে নতুন ভাবে এগিয়ে যাবে এই গ্রাম পঞ্চায়েত।
গ্রাম পঞ্চায়ের সহ-সভাপতি পিআর প্রসাদ বলেন, 'গণতন্ত্রে মানুষই প্রভু। আর জনপ্রতিনিধি এবং আধিকারিকরা তাঁদের সেবা করার জন্য। তাই তাঁদের কোও কাজের জন্য আমাদের প্রভু সম্বোধন করার দরকার নেই। এটা তাঁদের দাবি, যেটা আমাদের পূরণ করতে হবে।'
নতুন নিয়ম কার্যকর করার পর ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের সামনে একটি নোটিশ টাঙানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, কোনও গ্রামবাসী যদি সম্মানসূচক শব্দ ব্যবহার না করার জন্য কোনও পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হন, তাহলে পঞ্চায়েতের সভাপতি বা সম্পাদকের কাছে সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। এছাড়া বয়স্কদের নাম ধরে সম্বোধন করতে ইতস্তত বোধ করলে মালায়লাম ভাষায় চেট্টান (দাদা) অথবা চেচী (দিদি) নামে সম্বোধন করতে পারবেন তাঁরা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন