পশ্চিমবঙ্গে যখন সিপিআইএম-এর যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই-এর ডাকে কোচবিহার থেকে কলকাতা ‘ইনসাফ যাত্রা’ চলছে তখনই কেরালায় মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের ডাকে শুরু হয়েছে রাজ্যব্যাপী জনসংযোগ যাত্রা ‘নবকেরালা’। মূলত রাজ্যের সাধারণ মানুষের অভাব অভিযোগ শোনার জন্য গত ১৮ নভেম্বর কেরালার মঞ্জেশ্বরম থেকে এই কর্মসূচির সূচনা করেন পিনারাই বিজয়ন।
রাজ্যের ১৪০টি বিধানসভা কেন্দ্র ঘুরে এই জনসংযোগ যাত্রা আগামী ২৪ ডিসেম্বর রাজধানী থিরুবনন্তপুরমে গিয়ে শেষ হবে। জনসংযোগ যাত্রার প্রথম তিনদিনেই অভূতপূর্ব সাড়া পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন সিপিআইএম নেতৃত্ব।
যাত্রার তৃতীয় দিনে কান্নুরের পেয়ান্নুরে সংবাদমাধ্যমের সাথে কথা বলার সময়, বিজয়ন বলেন, "সাধারণ মানুষ যেভাবে তাঁদের কথা আমাদের জানানোর জন্য এগিয়ে আসছেন তাতে এই যাত্রা কতটা সাফল্য পাবে তা এখনই বোঝা যাচ্ছে।
রবিবার এই যাত্রা কাসারগড় জেলার সমস্ত বিধানসভা কেন্দ্র পরিক্রমা করে এবং সোমবার সকালে এটি পেয়ান্নুরের থেকে ফের যাত্রা শুরু হয়েছে।
জনসাধারণের ব্যাপক অংশগ্রহণের কথা জানিয়ে রাজ্য সিপিআই(এম) সম্পাদক এবং কান্নুর জেলার তালিপারম্বার বিধায়ক এম ভি গোবিন্দন বলেন, মাত্র দুই দিনের মধ্যেই এই জনসংযোগ যাত্রা মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
যদিও প্রবীণ কংগ্রেস বিধায়ক রমেশ চেন্নিথালা এই যাত্রাকে একটি "চমক" বলে অভিহিত করেছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রীরা বা মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন কেউই সাধারণ মানুষ যখন তাদের অভিযোগ নিয়ে আসছেন তাঁদের সঙ্গে কথা বলছেন না। কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন বিরোধীদের ৪১ জন বিধায়ক সরকারের এই জনসংযোগ যাত্রায় অংশগ্রহণ করছে না।
তিনি আরও বলেন, "আমাদের বিশিষ্ট নেতা কে. করুণাকরণ এবং ওমেন চান্ডি সবসময় সরাসরি সাধারণ মানুষের সঙ্গে দেখা করতেন এবং জনগণের সমস্যার কথা শুনতেন। আমরা এখন যা দেখছি তা হল বিজয়ন এবং মন্ত্রিসভাকে সঙ্গে নিয়ে ৪০ গাড়ির কনভয়ের এক বিলাসবহুল যাত্রা। রাজ্য যখন চরম অর্থ সংকটে ভুগছে তখন এই বিশাল অর্থের অপচয় অপ্রয়োজনীয়।”
কর্মসূচী অনুসারে, ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত, মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন এবং তার মন্ত্রীরা প্রতিদিন দিনের বেলায় চারটি করে বিধানসভা কেন্দ্রে সাধারণ মানুষের কাছে যাবেন এবং এবং রাতে সরকারি গেস্ট হাউসে বিশ্রাম নেবেন।
এই জনসংযোগ যাত্রার জন্য সাপ্তাহিক মন্ত্রিসভার বৈঠক যাতে কোনোভাবেই বন্ধ না হয় তাই ১৪০টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় মন্ত্রীরা প্রতি বুধবার মিলিত হবেন এবং বৈঠক করবেন।
এই যাত্রা প্রসঙ্গে পিনারাই বিজয়ন জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার মনে করে যে জনসাধারণের সাথে সম্পর্কিত প্রতিটি বিষয় মনোযোগ সহকারে শোনা উচিত এবং প্রশাসনিক নেতৃত্বের হস্তক্ষেপ করা উচিত। সে লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত চেষ্টা চলছে। এই পরিস্থিতির উন্নতি করা প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, মৎস্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে উপকূলীয় অঞ্চলে সভা এবং বন সংলগ্ন এলাকায় বনমন্ত্রীর নেতৃত্বে বন-বান্ধব বৈঠকগুলি থেকে যে সমস্যা উঠে এসেছে তা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। শুধু মন্ত্রীরাই নয়, মুখ্য সচিবসহ কর্মকর্তারাও এতে অংশ নিচ্ছেন এবং প্রতিটি বিষয় ব্যাপকভাবে পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন