কেরলের ধারাবাহিক বিস্ফোরণ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখরের বিরুদ্ধে দায়ের হল মামলা। রাজ্য সরকার সূত্রে জানা গিয়েছে, সামাজিক বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগে মন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই কেরলের এক সিনিয়র পুলিশ আধিকারিকের বক্তব্য উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, "বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতা বাড়ায় এমন বিবৃতি দেওয়ার জন্য মন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।"
রবিবার সকালে কোচি থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে কালামাসেরিতে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পরপর তিনবার বিস্ফোরণ হয়। এই ঘটনায় মোট তিনজনের মৃত্যু হয়। আহত হয়েছেন ৫০ জনের বেশি। ঘটনার দায় স্বীকার করে ওইদিনই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন ৪৮ বছরের ডোমিনিক মার্টিন নামের এক ব্যক্তি। তিনিও ওই একই ধর্মের বলে জানা গেছে।
বিস্ফোরণের ঘটনায় কেরলের বাম সরকারকে আক্রমণ করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর বলেন, কেরল সরকারের তুষ্টিকরণের রাজনীতির কারণে এই ঘটনা ঘটেছে। মন্ত্রীর মন্তব্যের পাল্টা দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। ‘যারা বিষাক্ত তারা সবসময় বিষ ছড়াতে থাকবে’, বলে মন্তব্য করেছেন বিজয়ন।
রবিবার নিজের এক্স হ্যান্ডেলে পিনারাই বিজয়নের ছবি দিয়ে রাজীব চন্দ্রশেখর লেখেন, “দুর্নীতির অভিযোগে পরিপূর্ণ এক সমালোচিত মুখ্যমন্ত্রী (এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও বটে) পিনারাই বিজয়নের নোংরা নির্লজ্জ তুষ্টিকরণের রাজনীতি। যখন কেরালায় সন্ত্রাসী হামাসরা বিদ্রোহ ঘোষণা করে নিরপরাধ খ্রিস্টানদের উপর আক্রমণ এবং বোমা বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছে, তখন তিনি দিল্লিতে বসে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দেখাচ্ছেন।" যদিও কেরলে বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করা ব্যক্তি একজন খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী।
চন্দ্রশেখরের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩ এবং ১৫৩-এ ধারায় (দাঙ্গা উসকে দেওয়া এবং বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতা ছড়ানো) মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সিপিআইএম নেতা বিজয়ন রবিবার দিল্লিতে একটি দলীয় প্রোগ্রামে অংশ নিয়েছিলেন, যেখানে দলের তরফ থেকে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি দেখানো হয়েছিল। চন্দ্রশেখরের এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছেন বিজয়ন। তিনি বলেন, "যারা বিষাক্ত তারা সবসময় বিষ ছড়াতে থাকবে। উনি একজন মন্ত্রী এবং ওঁর উচিত তদন্তকারী সংস্থার প্রতি ন্যূনতম সম্মান প্রদর্শন করা। তদন্ত সবে শুরু হয়েছে, তারা ইতিমধ্যেই জনসংখ্যার একটি নির্দিষ্ট অংশকে লক্ষ্য করে প্রকাশ্য বিবৃতি দেওয়া শুরু করে দিয়েছে।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন