দিল্লি বিজেপির সহ-সভাপতির পদ পেলেন কপিল মিশ্র, যিনি ঘৃণাসূচক এবং সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক মন্তব্যের জন্য পরিচিত। দিল্লি বিজেপির সভাপতি বীরেন্দ্র সচদেভা শনিবার মিশ্রকে এই পদে নিযুক্ত করেছেন।
সংবাদসংস্থা সূত্রে খবর, চলতি সপ্তাহের শুরুতেই বিজেপির তরফ থেকে ঘোষিত নতুন পদাধিকারীদের তালিকায় কপিল মিশ্রের নাম ছিল। কিন্তু বিশেষ কিছু কারণে এটি ঘোষণা করা হয়নি।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে হওয়া দিল্লি দাঙ্গায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল কপিল মিশ্রের বিরুদ্ধে। শাহিনবাগে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের রাস্তা থেকে সরানোর জন্য পুলিশকে তিনদিনের ‘আলটিমেটাম’ দিয়েছিলেন মিশ্র, নইলে রাস্তা ‘সাফাই’ অভিযানে নামবেন তিনি বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। এরপরই দিল্লি দাঙ্গা হয়, যেখানে প্রায় ৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল এবং কয়েকশ আহত হয়েছিলেন। ঘরছাড়া হন বহু মানুষ। আইনজীবীদের একটি দল কপিল মিশ্রের উস্কানিমূলক সাম্প্রদায়িক মন্তব্যের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছিল।
বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগে আম আদমি পার্টি করতেন কপিল মিশ্র। অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সরকারে মন্ত্রী ছিলেন তিনি। কিন্তু ২০১৯ সালের আগস্ট মাসে দলের প্রধান কেজরিওয়ালের সাথে মত পার্থক্য হওয়ায় আপ ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। এরপর ধর্মীয় বিদ্বেষ ও ঘৃণামূলক মন্তব্য করে মিডিয়ায় খবরে আসেন।
২০২০ সালে দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের সময় শাহিনবাগকে 'মিনি পাকিস্তান' বলে তুলনা করে টুইট করেন এই নেতা। সাম্প্রদায়িক অনুভূতিতে আঘাত করার অভিযোগে তাঁর ওপর ৪৮ ঘণ্টা প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল কমিশন। পাশাপাশি মুছে ফেলা হয় ওই টুইটও। বিধানসভা নির্বাচনে দিল্লির মডেল টাউন কেন্দ্র থেকে লড়লেও AAP-এর অখিলেশ পতি ত্রিপাঠীর কাছে হেরে যান তিনি।
গত এপ্রিল মাসে দ্বাদশ শ্রেনীর ইতিহাসের পাঠ্যপুস্তক থেকে মুঘল সাম্রাজ্যের কিছু অধ্যায় মুছে ফেলার এনসিইআরটি-র সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছিলেন মিশ্র।
বিজেপিতে যোগ দান করার পর এই প্রথম কোনও সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়া হল হিন্দুত্ব মতাদর্শ নিয়ে উত্তেজক বক্তৃতা দেওয়ার জন্য পরিচিত কপিল মিশ্রকে। লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখেই বিজেপি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন