৪০ লক্ষ টাকা ঘুষ নিতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়লেন বিজেপি বিধায়কের ছেলে। কর্ণাটকের এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে। এই ঘটনার পরেই ধৃত বিজেপি বিধায়কের ছেলের বাড়িতে তল্লাশি শুরু হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত লোকায়ুক্ত কর্তৃপক্ষ তাঁর এবং তাঁর সহযোগীদের বাড়ি থেকে নগদ ৭.৬২ কোটি টাকা উদ্ধার করেছে। এখনও জারি রয়েছে তল্লাশি। বৃহস্পতিবার ৪০ লক্ষ টাকা ঘুষ নেওয়ার সময় লোকায়ুক্তের হাতে ধরা পড়েন প্রশান্ত।
বিজেপি বিধায়ক মাদল বিরূপাক্ষর ছেলে প্রশান্ত বেঙ্গালুরু ওয়াটার সাপ্লাই অ্যান্ড সুয়ারেজ বোর্ডের চিফ অ্যাকাউন্টেন্ট হিসেবে কর্মরত। জানা গেছে, লোকায়ুক্ত তদন্তকারীরা প্রশান্তের বাসভবন এবং অফিস থেকে বিশাল অঙ্কের নগদ টাকা উদ্ধার করেছেন। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত প্রশান্ত সহ পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
লোকায়ুক্ত কর্তৃপক্ষের সূত্র অনুসারে, সিদ্দেশ নামে প্রশান্তের এক আত্মীয়, তাঁর হিসাবরক্ষক সুরেন্দ্রকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া নিকোলাস ও গঙ্গাধর নামে আরও দু'জন, যাঁরা নগদ ৪০ লক্ষ টাকা দিতে এসেছিলেন তাঁদেরও আটক করা হয়েছে। অভিযুক্তদের লোকায়ুক্ত বিশেষ আদালতে পেশ করা হবে এবং আরও তদন্তের জন্য তাদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হবে।
বেঙ্গালুরুর সঞ্জয়নগর এলাকার কেএমভি ম্যানশনে চান্নাগিরি আসনের বিজেপি বিধায়ক মাদল বিরুপাক্ষ। তাঁর বাসভবন ও অফিসেও অভিযান চালানো হয়েছে। বাড়ি থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি ও অন্যান্য জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করেছে কর্তৃপক্ষ।
এই ঘটনাকে ক্ষমতাসীন বিজেপির জন্য একটি গুরুতর ধাক্কা হিসাবে দেখা হচ্ছে। ঘটনাটি এমন এক সময়ে সামনে এসেছে যখন কংগ্রেসের পক্ষ থেকে রাজ্যজুড়ে সরকারি টেন্ডারে "৪০ শতাংশ কমিশন" আন্দোলন শুরু করা হয়েছে। কংগ্রেস জানিয়েছে তাদের আন্দোলনের ফলে দুর্নীতি ও কমিশনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
জানা যাচ্ছে, প্রশান্ত একটি টেন্ডার প্রক্রিয়ার জন্য ৮০ লক্ষ টাকা ঘুষ দাবি করেছিলেন এবং সেই ঘুষেরই অংশ হিসেবে অফিসে ৪০ লক্ষ টাকা নেবার সময় ধরা পড়েন তিনি।
কর্ণাটক সোপস অ্যান্ড ডিটারজেন্টস লিমিটেডকে (কেএসডিএল) কাঁচামাল সরবরাহের জন্য দরপত্র বরাদ্দ সংক্রান্ত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। প্রশান্তের বাবা মাদল বিরূপাক্ষ কেএসডিএল-এর চেয়ারম্যান।
কাঁচামাল সংগ্রহের টেন্ডারের জন্য কেএসডিএল-এর চেয়ারম্যানের তরফে ঘুষের টাকা গৃহীত হওয়ায়, বিজেপি বিধায়ক মাদল বিরূপাক্ষকেও জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে৷ লোকায়ুক্ত আয়োগ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে একটি মামলা দায়ের করেছে এবং তদন্ত শুরু করেছে।
সূত্র মারফত জানা গেছে, এর আগে প্রশান্ত কর্ণাটক রুরাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের (KIRDL) ৫৫ কোটি টাকার অপব্যবহার মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন। প্রশান্ত এবং অন্য দুজনকে সরকার বরখাস্ত করেছে এবং মামলাটি অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ব্যাপারে সুরতকল থানায় মামলা হয়েছে।
- With IANS Inputs
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন