আবারও প্রকাশ্যে বিজেপির গোষ্ঠী সংঘাত। ভারতীয় জনতা পার্টির সাধারণ সম্পাদক বিএল সন্তোষের সঙ্গে কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পার পক্ষ নিয়ে বিবাদে জড়ালেন তাঁর ঘনিষ্ঠ সহকর্মী তথা প্রাক্তন মন্ত্রী এমপি রেণুকাচার্য। ইয়েদুরাপ্পার অনুপস্থিতিতে কর্ণাটকের বিজেপি নেতৃত্বদের নিয়ে বৈঠক করায় সন্তোষের উপর ক্ষোভ উগরে দিলেন রেণুকাচার্য। সন্তোষের বিরুদ্ধে দলকে নিয়ন্ত্রণ করার গুরুতর অভিযোগ তুললেন তিনি।
বৃহস্পতিবার কর্ণাটকের বিজেপি নেতৃত্বদের নিয়ে একটি বৈঠক ডাকেন বিজেপির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক বিএল সন্তোষ। সেই বৈঠকে সন্তোষ ২০১৩ সালের কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনের স্মৃতি টেনে ইয়েদুরাপ্পাকে কটাক্ষ করেন। সেই সময় ইয়েদুরাপ্পা বিজেপি থেকে বেরিয়ে একক প্রচেষ্টায় ‘কর্ণাটক জনতা পক্ষ’ দল গঠনের পরেও বিজেপি ৪০টি আসন জিতেছিল। এই নিয়ে এদিন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর তীব্র সমালোচনা করেন সন্তোষ। তিনি বলেন, “২০১৩ সালে অনেকে বলেছিলেন গেরুয়া পার্টি ‘ভ্যানিস’ হয়ে যাবে। কিন্তু তাও আমরা ৪০টি আসনে জিতেছিলাম।”
বিজেপি সূত্রে খবর, ইয়েদুরাপ্পাকে আরও কটাক্ষ করার জন্য এদিন সন্তোষ সর্বশেষ কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনের কথাও উল্লেখ করেন। কারণ, ২০১৩ সালের পর এই প্রথমবার ইয়েদুরাপ্পাকে সামনে না রেখেই নির্বাচনে লড়াই করে বিজেপি এবং ৬০-এরও বেশি আসনে জয় লাভ করতে সক্ষম হয়।
কিন্তু সন্তোষের এই মন্তব্যগুলি মোটেও পছন্দ হয়নি ইয়েদুরাপ্পা ঘনিষ্ঠ প্রাক্তন মন্ত্রী রেণুকাচার্যের। শেষ বিধানসভা নির্বাচনে সন্তোষ কেন ৭২ জন নতুন মুখকে প্রার্থী করেছেন সেই নিয়ে আক্রমণ করেন রেণুকাচার্য। তিনি বলেন, “উনি (বিএল সন্তোষ) নেতাদের এমন একটি দল তৈরি করেছেন যারা আজ পর্যন্ত কোনোদিন মানুষের রায়ে নির্বাচনে জেতেননি। ইয়েদুরাপ্পাকে ওরা একঘরে করে দিয়েছে। ইচ্ছে করে এমন একটি দিনে দলীয় বৈঠক ডাকা হয়েছে যখন ইয়েদুরাপ্পা তাঁর স্বপ্নের প্রজেক্ট শিবমোজ্ঞা বিমানবন্দরের পরিষেবা শুরুর উদঘাটন করার জন্য বেঙ্গালুরুর বাইরে রয়েছেন।”
রেণুকাচার্য আরও অভিযোগ করেন, “ইয়েদুরাপ্পার দেওয়া অভিশাপের জন্যই কর্ণাটকে লজ্জার হার পেয়েছে বিজেপি। এখানে যারা বৈঠক করছেন তারা কেউই দলটিকে তৈরি করেননি। উনি (সন্তোষ) ২০০৬-০৭ সালে সংঘ পরিবার থেকে এসে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হতে চান। উনি গোটা দলটাকেই নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছেন। উনি ইয়েদুরাপ্পাকে সরিয়ে কর্ণাটকের বিজেপির শীর্ষে থাকতে চান। উনি বিজেপিতে লিঙ্গায়েত নেতৃত্বের অবসান ঘটিয়েছেন। কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগদীশ শেত্তারকেও নির্বাচনের টিকিট দেননি, যার পিতা জনসংঘের সদস্য ছিলেন। শেত্তার কর্ণাটকের বিরোধী দলনেতা, মুখ্যমন্ত্রী ও বিধানসভার স্পীকারের দায়িত্বও সামলেছেন, কিন্তু তাঁকেই নির্বাচনে লড়তে দিলেন না উনি।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন