রেলের জন্য উধাও কেন পৃথক বাজেট? বার বার ট্রেন দুর্ঘটনা নিয়ে কেন্দ্রকে তোপ 'ইন্ডিয়া'র

People's Reporter: বার বার ট্রেন দুর্ঘটনার ফলে কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে লেখেন, আমি প্রশ্ন করতে চাই, এটাই কি সরকার চালানোর নমুনা? সরকারের উদাসীনতা কি শেষ হবে না?
বার বার ট্রেন দুর্ঘটনা নিয়ে কেন্দ্রকে তোপ ইন্ডিয়া জোটের
বার বার ট্রেন দুর্ঘটনা নিয়ে কেন্দ্রকে তোপ ইন্ডিয়া জোটের গ্রাফিক্স চিত্র
Published on

২০২৩ সালে চেন্নাইগামী হাওড়া-করমন্ডল এক্সপ্রেস। তারপর চলতি বছর কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস, ডিব্রুগড় এক্সপ্রেস এবং এরপর মঙ্গলবার সকালে হাওড়া-মুম্বাই এক্সপ্রেস। বারবার দুর্ঘটনার পর প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ট্রেনের সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে। আর এই আবহে কেন্দ্র সরকারকে একহাত নিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ বিজেপি বিরোধী মঞ্চ ইন্ডিয়ার নেতৃত্বরা।

মঙ্গলবার ভোরে ঝাড়খন্ডের চক্রধরপুরের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পরে হাওড়া-মুম্বাইগামী সিএসএমটি এক্সপ্রেস। জানা গেছে, ট্রেনের ১৮ টি কামরা লাইনচ্যুত হয়েছে। এই দুর্ঘটনায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত অন্তত ২০ জন।

পরপর ট্রেন দুর্ঘটনা নিয়ে কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রাক্তন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের এক্স হ্যান্ডেলে শোক প্রকাশ করে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান তিনি। এরপর তিনি লেখেন, “আমি প্রশ্ন করতে চাই, এটাই কি সরকার চালানোর নমুনা? প্রতি সপ্তাহে দুঃস্বপ্নের এই ধারাবাহিকতা, রেললাইনে এই মৃত্যুমিছিল—কত দিন আর আমরা সহ্য করব? সরকারের উদাসীনতা কি শেষ হবে না?”

মুখ্যমন্ত্রীর পর রেলের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন ইন্ডিয়া জোটের নেতৃত্বরা। সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব নিজের এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, “রেলে যাত্রী সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিয়ে বড় বড় দাবি করে সরকার। তার পরও দুর্ঘটনা কী ভাবে হচ্ছে? কেন সাধারণ মানুষের প্রাণ যাচ্ছে?”

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার বাজেট পেশ করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সিতারমন। প্রায় দেড় ঘন্টার বাজেট বক্তৃতায় মাত্র একবার শোনা গিয়েছিল রেল নিয়ে মন্তব্য। সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার সাংসদ মহুয়া মাজিও কেন্দ্রকে একহাত নিয়েছেন। হেমন্ত সোরেনের দলের সাংসদ বলেন, “অর্থমন্ত্রী রেলের ব্যাপারে কোনও কথাই বললেন না (বাজেটে)। আগে রেলের জন্য পৃথক বাজেট হত। আর এখন রেলের জন্য কিছুই করছে না কেন্দ্র।”

অন্যদিকে, ১৯৬৫ সালে রেল দুর্ঘটনার পর রেল মন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রী। সেকথা মনে করিয়েছেন তৃণমুল সাংসদ কীর্তি আজাদ।

আরজেডি সাংসদ মনোজ ঝাঁ আবার প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন ‘কবচ’ ব্যবস্থা নিয়ে। তিনি বলেন, “এখন রেল দুর্ঘটনা ছাড়া একটি দিনও যদি কেটে যায়, সাধারণ মানুষ ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানান। গত বছরের বাজেটে ‘কবচ’ ব্যবস্থা নিয়ে বড় বড় দাবি করা হয়েছিল। কিন্তু এ বারের বাজেটে এক বারের জন্যও সেটির কথা উল্লেখ করলেন না।”

কংগ্রেস সাংসদ মানিকরাম ঠাকুর আবার ঝাড়খণ্ডের রেল দুর্ঘটনার বিষয়টি নিয়ে কড়া আক্রমণ শানিয়েছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে। তিনি বলেন, “অশ্বিনী বৈষ্ণব রেলমন্ত্রী হিসাবে নন, রেল দুর্ঘটনা মন্ত্রী হিসাবে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।”

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in