দিল্লিতে কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টে ৩ পড়ুয়া মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের কাছে চিঠি লিখলনে এক পড়ুয়া। চিঠিতে মূলত দিল্লি সরকার ও পৌরসভার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি।
দিল্লির পরিস্থিতিতে শীর্ষ আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়ে প্রধান বিচারপতির কাছে চিঠি লিখেছেন অবনাশ দুবে নামের এক পড়ুয়া। তবে চিঠিটি পিটিশন হিসেবে গ্রহণ করা হবে কিনা তা নিয়ে কোনও নির্দেশ দেননি।
চিঠিতে লেখা রয়েছে, "বৃষ্টির কারণে বেসমেন্টটি জলে ভরে যায় এবং তিনজন পড়ুয়া সেখানে আটকে থেকে প্রাণ হারিয়েছেন। মুখার্জি নগর এবং রাজেন্দ্র নগরের মতো এলাকাগুলি পৌর কর্পোরেশনের অবহেলার কারণে বহু বছর ধরে জল জমার সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে৷ রাস্তা দিয়ে হাঁটা যায় না। রাস্তার উপর নর্দমার জল উঠে আসে। সেখান দিয়েই হাঁটতে হয়। আজ আমাদের মতো ছাত্ররা নরকের জীবন যাপন করে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে"।
ওই ছাত্র আরও লেখেন, "আমাদের মতো ছাত্ররা যেকোনও উপায়ে লক্ষ্যের দিকে এগোচ্ছি। কিন্তু গতকালের ঘটনা প্রমাণ করেছে ছাত্রদের জীবন নিরাপদ নয়। দিল্লি সরকার এবং মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন আমাদেরকে কীটপতঙ্গের মতো জীবনযাপন করতে বাধ্য করছে। এর ন্যায়বিচার হওয়া চাই"।
পাশাপাশি অবিনাশ লেখেন, "সুস্থ জীবন যাপনের সাথে সাথে পড়াশোনা করা আমাদের মৌলিক অধিকার। দিল্লির ঘটনা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক এবং উদ্বেগজনক। জল জমার কারণে পড়ুয়াদের মৃত্যু হয়ে যবে এটা ভাবা যাচ্ছে না। শিক্ষার্থীদের জীবনের নিরাপত্তা কোথায়? ছাত্রদের জন্য সুস্থ পরিবেশ দরকার"।
এক মাস আগে কিশোর সিং কুশওয়াহ নামের এক IAS পড়ুয়া দুর্ঘটনার আশঙ্কা করে ওই সেন্টারের কর্তৃপক্ষ, রাজ্য সরকার এবং দিল্লির পুরসভার কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন। বেসমেন্টে থাকা লাইব্রেরি বেআইনি বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
উল্লেখ্য, একটানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে জলমগ্ন গোটা রাজধানী। এই পরিস্থিতিতে শনিবার সন্ধ্যায় রাজেন্দ্রনগরের কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টে আচমকা হু হু করে বৃষ্টির জল ঢুকতে শুরু করে। মুহূর্তের মধ্যে জলে ভরে ওঠে বেসমেন্ট, যেখানে কোচিং সেন্টারের লাইব্রেরি ছিল। সেই সময় প্রায় ৩৫ জন পড়ুয়া ওখানে ছিলে। কয়েকজন দ্রুত বাইরে বেরিয়ে এলেও অনেকেই সেখানে আটকে পড়েন। তাঁদের দড়ির মাধ্যমে উপরে টেনে তুলতে হয়। তিন জন পড়ুয়া উঠতে পারেননি। পরে তাঁদের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মৃতেরা হলেন তানিয়া সোনি (২৫), শ্রেয়া যাদব (২৫) এবং নবীন ডেলভিন (২৮)। এই ঘটনায় শহরের অন্তত ১৩টি কোচিং সেন্টার সিল করেছে দিল্লি পুরসভা। অভিযোগ, ওই সবকটি কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টগুলিকে বেআইনিভাবে ব্যবহার করা হচ্ছিল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন