আদিবাসী যুবকের মুখে প্রস্রাব কাণ্ডে উত্তাল মধ্যপ্রদেশ। অভিযুক্ত স্থানীয় বিজেপি নেতা একথা প্রকাশ্যে আসার পর এবং একাধিক বিজেপি বিধায়কের সাথে তার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর তীব্র অস্বস্তিতে পড়েছে পদ্ম শিবির। ভোটের মুখে দল এবং সরকারে যাতে কোনও আঁচড় না লাগে তার জন্য বাধ্য হয়ে ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান।
বৃহস্পতিবার নির্যাতিত আদিবাসী যুবক, পেশায় শ্রমিক, দশমত রাভাতকে নিজের বাসভবনে আমন্ত্রণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তাঁর পা ধুইয়ে তাঁর কাছে ক্ষমা চান তিনি। তাঁকে উত্তরীয় পরিয়ে কিছু উপহারও দেন।
৩৬ বছর বয়সী কারাউন্ডির বাসিন্দা দশমত রাভাতের পা ধুইয়ে দেওয়ার ভিডিও নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। টুইটারে তিনি লেখেন, “এই ভিডিও এই কারণে পোস্ট করছি যাতে সবাই বুঝতে পারে যে শিবরাজ সিং চৌহান মধ্যপ্রদেশে আছে মানে সেখানে জনগণই ঈশ্বর। কারো সাথে অত্যাচার সহ্য করা হবে না। রাজ্যের প্রতিটি নাগরিকের সম্মান, আমার সম্মান।“
টুইটারে পা ধুইয়ে দেওয়ার ছবিও শেয়ার করেছেন শিবরাজ। তিনি লেখেন, “এটি আপনার ব্যথা ভাগ করার একটি প্রচেষ্টা। আমি আপনার কাছে ক্ষমা চাইছি।“
ভগবান কৃষ্ণের শৈশবকালীন দরিদ্র বন্ধু সুদামার উল্লেখ করে শিবরাজ বলেন, “দশমত, এখন তুমি আমার বন্ধু।“
কথোপকথন কালে দশমত রাবতকে অনেক প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছিলেন মিঃ চৌহান, যার মধ্যে তিনি কীভাবে জীবিকা অর্জন করেন এবং তিনি এবং তাঁর পরিবার সরকারি প্রকল্পের সুবিধাভোগী কিনা এগুলো ছিল।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পর সাংবাদিকদের সামনে দশমত জানান, "তিনি আমার পরিবারকে ডেকেছেন এবং তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছেন, আমার ভালো লেগেছে।“
প্রবেশ শুক্লা নামের অভিযুক্ত ব্যক্তিকে মঙ্গলবার মধ্যরাতে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে জাতীয় সুরক্ষা আইনে মালা দায়ের করা হয়েছে।
এই ঘটনায় বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করেছেন কংগ্রেস। প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী টুইটারে লেখেন, “বিজেপির শাসনকালে আদিবাসী ভাই-বোনেদের প্রতি এই অত্যাচার বেড়েই চলেছে। মধ্যপ্রদেশের বিজেপি নেতার ওই অমানবিক অপরাধের জন্য আজ গোটা মানবজাতি লজ্জিত। এটাই হল আদিবাসী ও দলিতদের প্রতি বিজেপির আসল চেহারা আর মানসিকতা।”
মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ এই ঘটনা নিয়ে জানিয়েছেন, “এই ঘটনা দেশের আদিবাসী সম্প্রদায়ের অপমান। ক্ষমতার নেশায় বুঁদ বিজেপি মানুষকে মানুষ বলে মনে করে না।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন