সরকারি আধিকারিক হয়ে সংঘের ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানে কেন যোগ দেবেন? এই নিয়েই জোর বিবাদ লেগেছে মধ্যপ্রদেশের শাসকদল বিজেপির সঙ্গে বিরোধী দল কংগ্রেসের।
মধ্যপ্রদেশের সাতনা জেলায় রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের একটি অনুষ্ঠানে দুই সরকারি আধিকারিকের যোগদান নিয়েই শুরু হয়েছে এই বিতর্ক। সংঘের ওই অনুষ্ঠানের একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই বিতর্কের সূত্রপাত। এ নিয়ে কংগ্রেসের এক সাংসদ দাবি করেছেন, চলতি বছরের শেষেই মধ্যপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন। তাই এই সময় সরকারি আধিকারিকদের সংঘের এধরনের অনুষ্ঠান থেকে দূরে রাখাই ভালো। অন্যদিকে, রাজ্য বিজেপির এক নেতা পাল্টা কটাক্ষ করেছেন, “কংগ্রেস সাংসদের এই বক্তব্য আরএসএস-এর প্রতি কংগ্রেসের ঘৃণা প্রকাশ করে।”
প্রসঙ্গত, গত ১১ জুন মধ্যপ্রদেশের সাতনা জেলায় রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের একটি একান্ত ব্যক্তিগত অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এই অনুষ্ঠানের একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন মধ্যপ্রদেশ কংগ্রেসের মিডিয়া বিভাগের চেয়ারম্যান কেকে মিশ্র। সেই ছবিতে দেখা যাচ্ছে সাতনা জেলার জেলাশাসক অনুরাগ বর্মা ও সাতনা পুরসভার কমিশনার রাজেশ শাহি ওই অনুষ্ঠানে যোগদান করেছেন। কেকে মিশ্র সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছেন, “সাতনার জেলাশাসক ও পুরসভার চেয়ারম্যান ওই অনুষ্ঠানে স্বেচ্ছায় যোগ দেন এবং আরএসএস-এর প্রতীকী পতাকাকে সম্মান জানান।”
তিনি আরও জানিয়েছেন, “আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে ওই সরকারি আধিকারিকরা যে নিষ্ঠার সঙ্গে তাঁদের দায়িত্ব পালন করবেন এমনটা আশা করাই অর্থহীন। তাঁদের এই ব্যবহার সরকারি কর্মচারীদের ভাবমূর্তির বিপরীত।” তাঁর আরও সংযোজন, “আমরা এই বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রের কর্মচারী ও প্রশিক্ষণ বিভাগে অভিযোগ জানাবো।” কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ বিবেক তংখাও জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কাছে এই আধিকারিকদের নির্বাচনের প্রস্তুতি থেকে দূরে রাখার দাবি জানিয়েছেন।
যদিও বিজেপির রাজ্য সভাপতি রজনীশ আগরওয়াল ওই সরকারি আধিকারিকদের হয়ে সওয়াল করেছেন। সংবাদসংস্থাকে তিনি জানিয়েছেন, “ওই আধিকারিকরা কোনওরকম নিয়মবিধি লঙ্ঘন করেননি। আরএসএস-এর অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া বেআইনি বা অসাংবিধানিক নয় এবং এর জন্য সরকারি কর্মচারীদের কোনও নিয়মবিধি লঙ্ঘন করা হয় না। আরএসএস একটি গণতান্ত্রিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। তাঁরা সম্পূর্ণভাবে সংবিধানের আওতায় থেকে কাজ করেন। এখন কংগ্রেস এমন একটি সংগঠনকে ঘৃণার চোখে দেখলে সেটা তাঁদের সমস্যা।”
অন্যদিকে, যে আধিকারিকদের নিয়ে এত জলঘোলা সেই সাতনার জেলাশাসক অনুরাগ বর্মা ওই অনুষ্ঠানে তাঁর উপস্থিতি নিয়ে জানিয়েছেন, ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়াটাও তাঁদের একটা কাজ। কারণ, ওই অনুষ্ঠানে মন্ত্রী-সহ বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন