২০১৬ সাল থেকে ২০২১ সালের মধ্যে অর্থাৎ গত ৫ বছরে সারা দেশে মোট ৫০,৮৫৭টি শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এমনই চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট এসেছে ভারতের শিশু অধিকার রক্ষা এবং সেই সম্পর্কিত প্রচারমূলক সংস্থা, ন্যাশনাল কমিশন ফর প্রোটেকশন অফ চাইল্ড রাইটস (NCPCR)-র কাছে।
সরকারি রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিশুর অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এসেছে মধ্যপ্রদেশ থেকে (৯,৫৭২টি)। দ্বিতীয় স্থানেই রয়েছে উত্তরপ্রদেশ (৫,৩৪০টি)। তৃতীয় স্থানে রয়েছে ছত্তিশগড় (৪,৬৮৫টি), চতুর্থ ওড়িশা (৪,২৭৬টি) এবং পঞ্চম স্থানে রয়েছে ঝাড়খণ্ড (৩,২০৫টি)।
মূলত যে যে অভিযোগগুলির ভিত্তিতে কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত তদন্ত করে -
১) শিশু অধিকার লঙ্ঘন বা বঞ্চনা,
২) শিশুর সঠিক যত্নের প্রতি নজর রাখা
৩) শিশুর অধিকার উপভোগে বাধাদান
৪) শিশুদের জন্য বিদ্যমান আইন ও নীতি পর্যালোচনা
৫) শিশু অধিকার বঞ্চিত সংক্রান্ত বিষয়ে অনুসন্ধান করে জনসচেতনতামূলক প্রচার।
উদাহরণস্বরূপ, রাজস্থানের ভিলওয়াড়ায় মেয়েদের 'নিলাম' করার একটি প্রথা রয়েছে। এই প্রসঙ্গে শুক্রবার NCPCR চেয়ারম্যান পি কানুনগো জানান, বিষয়টি সঠিকভাবে তদন্ত করে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে। যে সকল পরিবারের মেয়েদের নিলাম প্রথার মাধ্যমে পাচার করা হয়েছে, সেইসব পরিবারের সাথে দেখা করতে আগামী ৭ নভেম্বর ভিলওয়াড়ায় যাবে NCPCR-র একটি বিশেষ দল।
সংবাদ সংস্থা IANS-কে NCPCR-র চেয়ারম্যান জানান, "আমরা চাই শিশু অধিকার সম্পর্কিত প্রতিটি মামলা রিপোর্ট করা হোক। সম্প্রতি, এই বিষয়ে আমরা সমস্ত রাজ্যের জেলাগুলিতে জুভেনাইল পুলিশ ইউনিট এবং তাদের সাথে সংযুক্ত আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেছি। বৈঠকের মাধ্যমে মূল সমস্যাগুলি জানা গেছে। এই বিষয়ে পুলিশের সংবেদনশীলতা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।"
তিনি আরও বলেন, "শিশু অধিকার সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন তৈরি হচ্ছে। পাশাপাশি, আমরা আইনজীবী এবং POCSO কোর্টের বিচারকদের সাথেও আলোচনা করেছি। আমাদের মূল লক্ষ্য, শিশুদের ন্যায়বিচার প্রদানের সাথে জড়িত সমস্যাগুলির দ্রুত সমাধান করা। POCSO আইন যদি সঠিকভাবে প্রয়োগ করা হয়, তবে শিশুদের উপর হওয়া অপরাধগুলিও বন্ধ হতে পারে।"
পাশাপাশি স্কুলগুলিতে সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন