সদ্য সমাপ্ত হয়েছে লোকসভা নির্বাচন। আর তার কয়েকমাস কাটতে না কাটতে টানাপোড়েন শুরু মহারাষ্ট্রের শাসক জোট ‘মহাদ্যুতির’ অন্দরে। রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ারের ‘জন সম্মান যাত্রা’র সময় কালো পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন জোটসঙ্গী বিজেপির নেতা-কর্মীরা। যার জেরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তাহলে কি ভাঙনের মুখে মহারাষ্ট্রের এনডিএ।
রবিবার পুণার জুন্নায় এলাকায় ছিল অজিত পাওয়ারের ‘জন সম্মান যাত্রা’। এনসিপি নেতার সেই কর্মসূচীর সময় কালো পতাকা দেখানোর অভিযোগ উঠলো বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। এনসিপির অভিযোগ, সেই বিক্ষোভে বিজেপির জেলাস্তরের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। যদিও রবিবারের সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে সোমবার রাজ্যের আরেক উপমুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফডণবীসের কাছে কৈফিয়ত চেয়েছেন এনসিপি (অজিত গোষ্ঠী) মুখপাত্র অমল মিতকারি।
উল্লেখ্য, চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে মহারাষ্ট্রের ৪৮ টি আসনের মধ্যে এনডিএ জোট পেয়েছে মাত্র ১৭ টি আসন। বিজেপি সাতটি, দুই শরিক শিবসেনা (শিন্ডে) এবং এনসিপি (অজিত) গোষ্ঠী যথাক্রমে জিতেছে ন’টি ও একটি আসন। পাঁচ বছর আগের ফল থেকে প্রায় দু’ডজন আসন কম পেয়েছে এনডিএ জোট। সে রাজ্যে এনডিএ –র খারাপ ফল নিয়ে অজিতের এনসিপি-র সঙ্গে বিজেপি নেতৃত্বের হাত মেলানোকে দায়ী করে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) মুখপত্রে একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছিল। সেই মুখপত্রে দাবি করা হয়েছিল, অহেতুক দল ভাঙানো বিজেপির ক্ষেত্রে সুবিধাজনক হয়নি।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে এনসিপিতে ভাঙন ধরানো হয়। যার ফলে কাকা শরদ পাওয়ারকে ছেড়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ বিধায়ক নিয়ে এনডিএ-তে যোগ দিয়েছিল অজিত পাওয়ার। যার ফলে বিজেপির পুরানো কর্মীদের মনঃক্ষুণ্ণ হয়েছে বলে দাবি করা হয় ওই মুখপত্রে। এরফলে বিজেপির বাজারদরও কমেছে বলে অভিযোগ তোলা হয়।
এই মুহূর্তে মহারাষ্ট্রের মোট ২৮৮ টি বিধানসভা আসনের মধ্যে বিজেপির ১০৩ এবং শিন্ডেসেনার ৩৮ জন বিধায়ক রয়েছেন। পাশাপাশি, বহুজন বিকাশ আঘাড়ীর ৩, প্রহার জনশক্তি পার্টির ২ এবং মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা, রাষ্ট্রীয় সমাজ পক্ষ, জেএসএসের এক জন করে বিধায়ক এবং ১৪ নির্দলের সমর্থনও রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের সরকারের পাশে। এই পরিস্থিতিতে অজিতের ৪০ জন বিধায়ককে বাদ দিলেও গরিষ্ঠতা হারাবেন না শিন্ডে। তাহলে কি সঙ্ঘের নির্দেশ মেনেই মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এনসিপির সঙ্গ ছাড়তে চলেছে বিজেপি?
অন্যদিকে, হরিয়ানা এবং জম্মু ও কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করলেও, মহারাষ্ট্রের নির্বাচন নিয়ে কিছু জানায়নি নির্বাচন কমিশন। গত ১৫ বছর ধরে মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানা বিধানসভা নির্বাচন একসাথেই হয়ে আসছে। কিন্তু ২০২৪-এ তার ব্যতিক্রম হল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন