'মুম্বইকে দেশের অর্থনৈতিক-বাণিজ্যিক রাজধানী বলা হয়। কিন্তু এই শিরোপা হাতছাড়া হয়ে যাবে যদি গুজরাটি ও রাজস্থানীরা এই শহর ছেড়ে চলে যান।' শুক্রবার রাতে আন্ধেরিতে এক অনুষ্ঠানে এমনই বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারি (Bhagat Singh Koshyari)।
শুধু তাই নয় - রাজ্যপাল কোশিয়ারি আরও বলেন, 'গুজরাটি, রাজস্থানী ব্যবসায়ীদের ব্যাবসার জোরেই বাণিজ্যনগরীর তকমা ধরে রাখতে পেরেছে- মুম্বই।' স্বয়ং রাজ্যপালের মুখে এহেন 'মারাঠা বিরোধী' মন্তব্যে তোলপাড় হয়েছে মহারাষ্ট্রের রাজ্য রাজনীতি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় আছড়ে পড়ছে সমালোচনার ঢেউ। মুখ খুলেছেন নাগরিক সমাজের একাংশ। দাবি উঠেছে রাজ্যপালকে অবিলম্বে মহারাষ্ট্র ছেড়ে চলে যেতে হবে। রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারিকে 'ক্ষমা চাওয়ার' দাবি জানিয়েছে উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা। প্রতিবাদে সরব হয়েছে কংগ্রেস, এনসিপি।
কোশিয়ারির মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন শিবসেনার প্রভাবশালী নেতা সঞ্জয় রাউত। তিনি বলেন, 'রাজ্যের কঠোর পরিশ্রমী মারাঠিদের অপমান করেছেন রাজ্যপাল।' সিন্ধের নাম না করে এ দিন তিনি বলেন, 'বিজেপির অনুগত মানুষ মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর মহারাষ্ট্রের অবমাননা শুরু হয়েছে।'
শিবসেনার সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদি বলেন, 'রাজ্যপালের মন্তব্য রক্ত জল করে বেঁচে থাকা মারাঠিদের জন্য চরম অপমানজনক। তাঁকে ক্ষমা চেয়ে এই মন্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে, অথবা তিনি এ রাজ্য ছেড়ে চলে যান।'
কংগ্রেস নেতা শচীন সাওয়ান্ত বলেন, 'এটা ভয়ানক ঘটনা যে একটি রাজ্যের রাজ্যপাল সেই রাজ্যেরই জনগণের মানহানি করছেন।’ তিনি আরও বলেন, এই রাজ্যপালের সময়ে মহারাষ্ট্রের পদে পদে অসম্মান হচ্ছে।'
তবে, সবাইকে ছাপিয়ে কোশিয়ারির মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন উদ্ধব ঠাকরে। শিবসেনা প্রধান বলেন, 'নিয়মিত এই ধরনের বিতর্কিত বিবৃতি দিয়ে থাকেন তিনি (রাজ্যপাল কোশিয়ারি )। মুম্বাই এবং থানে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, তাই সেই জায়গার নামে সাম্প্রদায়িক বিভাজন, এমনকি হিন্দুদের বিভক্ত করার চেষ্টা করছেন তিনি। কোশিয়ারি নামক এই পার্সেলটি এখানই প্যাক করা উচিত বা কারাগারের পিছনে রাখা উচিত।'
জানা যাচ্ছে, মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল কোশিয়ারি উত্তরাখণ্ডের মানুষ। এক সময় তিনি সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। অন্যদিকে আবার, শিবসেনার উত্তর ভারতীয় বিরোধী আন্দোলনের ধাক্কা পড়েছিল উত্তরাখণ্ডের মানুষের উপরও। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, শিবসেনার সেই উত্তর ভারতীয় বিরোধী আন্দোলনের বিরূপ প্রভাব পড়ে থাকতে পারে কোশিয়ারির উপর। দীর্ঘদিন পর তারই প্রতিক্রিয়া বেরিয়ে এসেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন