মহারাষ্ট্রে আবারও রাস্তায় নেমেছেন কয়েক হাজার কৃষক। ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (MSP)-সহ একাধিক দাবিতে বিদর্ভ থেকে আহমেদনগর পর্যন্ত ‘লং মার্চ’ শুরু করেছেন তাঁরা।
আজ (২৬ এপ্রিল) থেকে তিনদিন ব্যাপী এই ‘লং মার্চ’ চলবে আগামী ২৮ এপ্রিল, শনিবার পর্যন্ত। মহারাষ্ট্রের রাজস্ব ও দুগ্ধ উন্নয়ন মন্ত্রী রাধাকৃষ্ণ ভিখে পাটিলের লোনি অফিসে গিয়ে এই পদযাত্রা শেষ হবে। এই পদযাত্রার নেতৃত্ব দিচ্ছে অল ইন্ডিয়া কিসান সভা (AIKS)।
কৃষকদের এই 'লং মার্চ'-কে স্বাগত জানিয়েছে সিপিআই(এম)। এক টুইট বার্তায় সিপিআই(এম)-র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, 'কৃষকরা আবার মার্চ করছে! ২৬-২৭-২৮ এপ্রিল ২০২৩-এ আহমেদনগর জেলার আকোলে থেকে লোনি পর্যন্ত, হাজার হাজার কৃষকের তিন দিনের রাজ্যব্যাপী পদযাত্রায় নেতৃত্ব দিয়েছে অল ইন্ডিয়া কিসান সভা (AIKS)।'
AIKS-এর জাতীয় সভাপতি অশোক ধাওয়ালে (Ashok Dhawale) বলেন, মহামারী করোনার সময় লিটার প্রতি মাত্র ১৭ টাকায় দুধ বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছিল দুগ্ধ চাষীরা। এখন তারা কিছুটা লাভ করতে পারছে, বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রগুলি দুধ এবং দুগ্ধজাত পণ্য আমদানি করতে শুরু করেছে।
AIKS দাবি করেছে, গত দুই বছরে অতিবৃষ্টি এবং অকাল বৃষ্টিতে রাজ্যের বড় অংশে ফসল নষ্ট হয়েছে। রাজ্য সরকার কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল, কিন্তু, সেই ক্ষতিপূরণ এখনো তাঁরা পায়নি।
রাজ্যে কয়েক প্রজন্ম ধরে জমি চাষ করছে- এমন কৃষক ও কৃষি শ্রমিকদের আবাসনের জন্য জমি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল সরকার। এছাড়া, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বনভূমি, মন্দিরের জমি, ইনাম জমি, ওয়াকফ জমি দেওয়ার কথা বলেছিল সরকার। কিন্তু, সেই আশ্বাস এখনও মহারাষ্ট্র সরকার পূরণ করেনি বলে দাবি করেছে সিপিআই(এম)-এর কৃষক শাখা।
ধাওয়ালে বলেন, 'আমরা কৃষক ও কৃষি শ্রমিকদের নামে উল্লিখিত জমিগুলি ন্যস্ত করার দাবি জানিয়েছি। দুধ, তুলা, সোয়াবিন, তুর, ছোলা এবং অন্যান্য পণ্যের পারিশ্রমিক মূল্যসহ প্রয়োজনীয় জমি অধিগ্রহণের জন্য উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত। আমরা দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য আমদানিরও বিরোধিতা করছি।'
AIKS-র রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ডাঃ অজিত নাভালে (Dr Ajit Navale) সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন,'রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে কৃষকদের সমস্যাগুলি উপেক্ষা করা হচ্ছে। রাজ্যে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, দুর্নীতি ও ‘অনৈতিক রাজনীতির’ মুখোমুখি হচ্ছেন বঞ্চিত কৃষক, শ্রমিক ও কৃষি শ্রমিকরা। তাই, রাজ্য সরকার যাতে তাদের দাবির প্রতি কর্ণপাত করে, সে জন্য আরও একটি পদযাত্রা করে আন্দোলনকে তীব্র করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমরা।'
নাভালে বলেন, 'বিজেপির বেশিরভাগ নেতারা ঘুষ দিয়ে বা জেলের ভয় দেখিয়ে রাজনৈতিক দল ভাঙতে ব্যস্ত। জনগণের সমস্যা সমাধানের জন্য তাঁদের কাছে কোনও সময় নেই। তাই, বাধ্য হয়ে নামতে হয়েছে। এরপরও যদি আমাদের দাবি পূরণ না হয়, তাহলে আমরা আহমেদনগরের লনিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য 'মহাপদে' (Mahapadav) যেতে পারি।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন