মহারাষ্ট্রে রাজনৈতিক সংকট পঞ্চম দিনেও অব্যাহত। সোমবার সন্ধ্যেয় প্রায় ২২ জন বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে একনাথ শিন্ধের মুম্বাই ত্যাগের পর থেকে এখনও নাটকের যবনিকা পড়েনি। আপাতত ‘দলত্যাগ বিরোধী আইন’ থেকে বাঁচতে বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার নরহরি জিরওয়ালের কাছে ৩৭ জন বিধায়কের তালিকা জমা দিয়েছে বিদ্রোহী একনাথ শিন্ধে গোষ্ঠী।
একইসঙ্গে, একনাথ শিন্ধেকে নিজেদের দলনেতা হিসেবে দাবি করেছেন কমপক্ষে ৩৭ জন শিবসেনা বিধায়ক। দলের নতুন চিফ হুইপ হিসাবে বিধায়ক ভারত গোগাভালের নাম ঘোষণা করেছেন তাঁরা।
শিবসেনা নিয়ে উদ্ধব ঠাকরের বনাম একনাথ শিন্ধের দ্বন্দ্বের মধ্যে দলের ‘চিফ হুইপ’ ঘোষণা নিয়ে নতুন করে লড়াই শুরু হয়েছে। এদিনও শিন্ধে গোষ্ঠী দাবি করেছে, তাঁদের সঙ্গে ৪০ জন দলীয় বিধায়ক ছাড়াও নির্দল এবং ছোট দলগুলির সমর্থন রয়েছে।
গতকালই শিবসেনা সাংসদ অরবিন্দ সাওয়ান্ত জানান, ‘দলের হুইপ অমান্য করায় শিন্ধে-সহ ১২ জন বিদ্রোহী বিধায়কের বিরুদ্ধে ‘দলত্যাগ বিরোধী আইন’ কার্যকর করার দাবি জানিয়ে ডেপুটি স্পিকার নরহরি জিরওয়ালের চিঠি দেওয়া হয়েছে।’ একনাথ শিন্ধে ছাড়াও তালিকায় নাম রয়েছে - তানাজি সাওয়ান্ত, প্রকাশ সুরভে, সন্দীপন ভুমরে, ভারত গোগাভালে, বালাজি কিনিকার, অনিল বাবর, লতা সোনওয়ানে, ইয়ামিনী যাদব, সঞ্জয় শিরসাত, মহেশ শিন্ধে এবং আবদুল সাত্তার-এর।‘
তবে জানা যাচ্ছে, আইন অনুযায়ী দুই-তৃতীয়াংশ বিধায়ক যদি দলীয় হুইপ অমান্য করেন তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে ‘দলত্যাগ বিরোধী আইন’ কার্যকর হবে না। সেই হিসাবে শিবসেনার মোট ৫৬ জন বিধায়কের মধ্যে ৩৭ জনের সমর্থন থাকলে দলত্যাগ বিরোধী আইনের আওতায় পড়বেন না একনাথ শিন্ধেরা। তাই, শুক্রবার, ৩৭ জন বিধায়কের তালিকা প্রকাশ করে উদ্ধব ঠাকরে গোষ্ঠীকে পাল্টা দিয়েছে শিন্ধে গোষ্ঠী।
গত মঙ্গলবারই, একনাথ শিন্ধেকে সরিয়ে অজয় চৌধুরীকে সংসদীয় দলনেতা করার আর্জি জানিয়েছিল শিবসেনা। শুক্রবার তা গ্রহণ করেছেন বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার নরহরি জিরওয়াল। তারপরেই শিন্ধে গোষ্ঠীর ডেপুটেশন জমা দেওয়ার ঘটনা সামনে এসেছে।
গুয়াহাটি থেকে শিন্ধে দাবি করেন, ‘এই পদক্ষেপ (তাঁকে দলনেতা পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া) ‘বে আইনি’। বিধায়কদের ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।‘
এরপরেই শিন্ধে জানান, ‘আমরা এইসব দেখে ভীত নই। আমরা জানি তারা কী করছে এবং আমরা আইন ও পদ্ধতি সম্পর্কেও সচেতন।‘
এদিকে শিবসেনা সাংসদ এবং দলের মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত বলেন, ‘ডেপুটি স্পিকার জিরওয়ালের কাছে ১২ জন বিধায়ককে অযোগ্য ঘোষণা করার আবেদনের পাশাপাশি আইনি লড়াই শুরু হয়েছে। গণতন্ত্র সংখ্যাগরিষ্ঠ সংখ্যার উপর চলে, এটি যে কোনও সময় পরিবর্তন হতে পারে।‘
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন