টাকা নিয়ে লোকসভায় প্রশ্নকাণ্ডে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে সংসদ থেকে বহিষ্কারের প্রস্তাবই গৃহীত হল এথিক্স কমিটিতে। শিল্পপতি বন্ধু দর্শন হিরান্দানির থেকে টাকা নিয়ে সংসদে প্রশ্ন করার জন্য এবং নিজের সংসদের লগ-ইন আইডি দর্শনকে দেওয়ার অভিযোগে মহুয়াকে সংসদ থেকে বহিষ্কারের সুপারিশে এবার সিলমোহর দিল লোকসভার এথিক্স কমিটি। সূত্রে খবর, শুক্রবার লোকসভার স্পীকার ওম বিড়লাকে একটি খসড়া রিপোর্ট জমা দিয়ে কমিটির সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
গত অক্টোবরে দুবাইয়ের শিল্পপতি বন্ধু দর্শন হিরান্দানির থেকে টাকা নিয়ে ও বহুমূল্য উপহার নিয়ে লোকসভায় প্রশ্ন করার অভিযোগ উঠেছিল মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে। এই অভিযোগ উল্লেখ করে লোকসভার স্পীকার ওম বিড়লাকে চিঠি দিয়ে মহুয়ার সাংসদ পদ খারিজ করার দাবি করেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। অন্যদিকে, সিবিআইয়ের কাছে চিঠি দিয়ে এই মামলায় তদন্তের দাবি জানান মহুয়ার প্রাক্তন ‘বন্ধু’ জয় অনন্ত দেহাদ্রাই।
মহুয়ার বিরুদ্ধে স্পিকারের নির্দেশে লোকসভার এথিক্স কমিটির শুনানি চলছিল। বৃহস্পতিবার এই এথিক্স কমিটির বৈঠকে প্রথমে কিছু বিরোধী সাংসদের অভিযোগ শুনে সেগুলি নিয়ে আলোচনা হয়। তারপর দশ সদস্যের কমিটিতে মহুয়াকে লোকসভা থেকে বহিষ্কারের সপক্ষে ও বিপক্ষে ভোটাভুটি হয়। ভোটাভুটিতে দশজন সদস্যের মধ্যে ছয় সদস্য কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদকে বহিষ্কারের পক্ষে মত দিয়েছেন। বাকি চারজন বহিষ্কারের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। ৬:৪ ভোট নিয়ে বহিষ্কারের প্রস্তাব কমিটিতে একটি ৫০০ পাতার খসড়া রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে।
সূত্রে খবর, মহুয়াকে লোকসভা থেকে বহিষ্কারের প্রস্তাবে সিলমোহর দেওয়ার পাশাপাশি, ওই খসড়া রিপোর্টে মহুয়ার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলিকে ‘অত্যন্ত আপত্তিকর, অনৈতিক, জঘন্য ও অপরাধমূলক’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। রিপোর্টে এথিক্স কমিটির পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, “তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র ও শিল্পপতি দর্শন হিরানান্দানির মধ্যে যে টাকাপয়সার লেনদেন হয়েছে, তা নিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কেন্দ্রের আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক তদন্ত করা উচিত।”
আগামী শীতকালীন অধিবেশনে এথিক্স কমিটির ওই খসড়া রিপোর্ট লোকসভায় পেশ করা হতে পারে বলেও জানা গিয়েছে। যদিও কমিটির এই সিদ্ধান্তের আগে বুধবার লোকপাল মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বলে দাবি করেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। তৃণমূল সাংসদ যদিও এর পাল্টা জানিয়েছিলেন, সিবিআই আগে আদানি গোষ্ঠীর ১৩ হাজার কোটি টাকার কয়লা কেলেঙ্কারি নিয়ে মামলা দায়ের করুক।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন