তৃণমূলের বহিষ্কৃত লোকসভা সাংসদ মহুয়া মৈত্রের করা আবেদনের শুনানির দিন ধার্য হয়েছে শুক্রবার ১৫ ডিসেম্বর। শীর্ষ আদালতে বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি এস ভি এন ভাট্টির বেঞ্চে এই শুনানি হবে। গত ৮ ডিসেম্বর তৃণমূল সাংসদকে লোকসভা থেকে বহিষ্কার করা হয় এবং তাঁর সদস্যপদ খারিজ হয়ে যায়।
লোকসভায় কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে এথিক্স কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে বহিষ্কার করা হয়েছে। ব্যবসায়ী দর্শন হিরানন্দানীকে লোকসভা পোর্টালের লগ ইন-এর তথ্য দেবার কারণে সংসদের এথিক্স কমিটি তাঁকে অভিযুক্ত করে।
এর আগে বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে লোকসভায় প্রশ্ন করার অভিযোগ আনেন।
ব্যবসায়ী হীরানন্দানি এক হলফনামায় জানান, তৃণমূল সাংসদ মৈত্র লোকসভায় আদানি গোষ্ঠীকে নিশানা করে প্রশ্ন উত্থাপনের বিনিময়ে তাঁর কাছ থেকে টাকা, বিভিন্ন মূল্যবান উপহার নিয়েছেন।
এক্ষেত্রে তৃণমূল সাংসদের দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে টাকা বা উপহার নেবার কোনও প্রমাণ নেই এবং যে অভিযোগে এথিক্স কমিটি তাঁকে অপরাধী সাব্যস্ত করেছে সেই ধরণের কোনও বিধিও নেই।
স্পীকারের বহিষ্কারের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে গত সোমবার ১১ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেন মহুয়া মৈত্র। ১৫ পাতার আবেদন পত্রে তিনি এথিক্স কমিটির রিপোর্ট এবং তাঁকে বহিষ্কারের প্রস্তাবকে ‘সত্যের বিকৃতি’ বলে উল্লেখ করেছেন। পাশাপাশি, এথিক্স কমিটির তদন্তপ্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। কী ভাবে তাঁকে ব্যক্তিগত প্রশ্ন করে শুনানিকে কোন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সে কথার উল্লেখ রয়েছে মহুয়ার আবেদনে।
আবেদনে উল্লেখ করেছেন, কী ভাবে তাঁকে পাল্টা প্রশ্ন করতে বাধা দেওয়া হয়েছিল। ব্যবসায়ী দর্শন হীরানন্দানির হলফনামা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে মহুয়ার তরফে। তাঁর স্পষ্ট অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকারের ধারাবাহিক সমালোচনা করার কারণেই তাঁকে টার্গেট করে লোকসভা থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ‘সংখ্যাগরিষ্ঠতার ঔদ্ধত্য’। যা যুক্তি, আইন, এক্তিয়ার সব কিছু লঙ্ঘন করেছে।
প্রাক্তন সাংসদের অভিযোগ, বহিষ্কার করার দিন তাঁকে কথা বলতে দেওয়া হয়নি সংসদে। স্পীকারের তরফে যুক্তি ছিল, ২০০৫ সালে লোকসভার ১০ জন সাংসদের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন করার অভিযোগ উঠেছিল। সেই সময়ে তদন্ত কমিটি যে রিপোর্ট পেশ করে, তার ভিত্তিতে তাঁদের লোকসভা থেকে বহিষ্কার করা হয়। তৎকালীন স্পীকার অধুনা প্রয়াত সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, অভিযুক্তদের বলতে দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন