মণিপুরের পরিস্থিতির সঙ্গে রাজস্থান, বিহার, পশ্চিমবঙ্গের তুলনা টানায় বিজেপির কড়া সমালোচনা করলেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা পি চিদাম্বরম। রবিবার করা এক ট্যুইটে চিদাম্বরম জানান, মণিপুরের সঙ্গে অন্য রাজ্যের তুলনা টেনে বিজেপি হিংসা বিধ্বস্ত মণিপুর নিয়ে ওঠা বিতর্ক পাশ কাটাতে চাইছে।
গত ৩ মে থেকে চলা জাতিগত দাঙ্গায় মণিপুরে এখনও পর্যন্ত ১৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং কয়েকশো মানুষ আহত হয়েছেন। গত ৩ মে মেইতেই জনগোষ্ঠীকে তফশিলি উপজাতি (এসটি) স্বীকৃতি দেবার বিরোধিতা করে অন্যান্য আদিবাসী জনগোষ্ঠীর আদিবাসী সংহতি মিছিলের পরেই রাজ্য জুড়ে দুই জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়।
এদিনের ট্যুইটে চিদাম্বরম বলেন, ধরে নেওয়া গেল যে বিহার, পশ্চিমবঙ্গ এবং রাজস্থানে মহিলাদের ওপর হিংসার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু তাতে কি মণিপুরের লাগাতার সংঘর্ষ এবং হিংসার ঘটনাকে অস্বীকার করা যায়?
তিনি আরও বলেন, উপত্যকায় কি আর কোনও কুকি অবশিষ্ট আছে? চুরাচন্দ্রপুর বা অন্যান্য পাহাড়ি জেলায় আর কি কোনও মেইতেই অবশিষ্ট আছে? যদি সমস্ত রিপোর্ট সত্যি হয় তাহলে মণিপুরে জাতিগত হত্যা সম্পূর্ণ হয়েছে।
চিদাম্বরম আরও বলেন, সঠিকভাবে মূল্যায়ন করলে দেখা যাবে মণিপুরে সাংবিধানিক সরকারের পতন ঘটেছে। মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এবং অন্যান্য মন্ত্রীদের নির্দেশ তাদের বাড়ি এবং অফিসের বাইরে কার্যকরী হয়না।
ক্ষোভের সঙ্গে চিদাম্বরম বলেন, কীভাবে মণিপুরের সঙ্গে বিহার পশ্চিমবঙ্গ বা রাজস্থানের তুলনা করা যেতে পারে? কেন্দ্রীয় সরকার কেবল অযোগ্য এবং পক্ষপাতদুষ্টই নয়, পাশপাশি নির্মম এবং নিষ্ঠুর, যারা ধোঁয়ার আড়ালে নিজেদের লুকিয়ে রাখে।
চিদাম্বরম বলেন, যদি বিহার, পশ্চিমবঙ্গ এবং রাজস্থানে কঠোর পদক্ষেপের প্রয়োজন তবে সেই সব রাজ্য সরকারকে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিন, কিন্তু তা কোনোভাবেই মণিপুরে যে বর্বরতা ঘটেছে তার অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করা যায় না। মণিপুরে সরকার ভেঙে পড়েছে। ভারত সরকার স্বতঃপ্রণোদিত কোমায় আচ্ছন্ন।
গত বুধবার দুই মহিলার ওপর অত্যাচারের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হবার পর মণিপুরে আবারও নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে মণিপুর জুড়ে বিক্ষোভ চলছে।
উল্লেখ্য, মণিপুরের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মেইতেই জনগোষ্ঠীর। যারা অধিকাংশই ইম্ফল উপত্যকা অঞ্চলে থাকে। অন্যদিকে জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ কুকি ও নাগা জনগোষ্ঠীর। যার অধিকাংশই পার্বত্য জেলাগুলোতে বসবাস করেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন