আরও অশান্ত হল মণিপুর। সোমবারের পর মঙ্গলবার ফের ছাত্রদের বিক্ষোভ মিছিলকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠলো ইম্ফল। এদিনও রাজভবন উদ্দেশ্য করে ছাত্র মিছিলে পুলিশি হামলায় ৫০ জনের বেশি ছাত্র আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। এদিন ছাত্রদের পক্ষ থেকে অবিলম্বে কেন্দ্রের নিরাপত্তা উপদেষ্টা কুলদীপ সিং এবং ডিজিপি রাজীব সিং-এর অপসারণ দাবি করা হয়।
এদিনের ছাত্রদের বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের পক্ষ থেকে কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়া এবং লাঠিচার্জ-এর অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশের বক্তব্য অনুসারে, ছাত্রদের কাছে বারবার হিংসা না করার আবেদন জানিয়ে ব্যর্থ হবার পর পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে এবং লাঠি চালায়।
এই ঘটনায় ৫০ জনের বেশি ছাত্র আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। আহতদের স্থানীয় রিজিওনাল ইন্সটিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সস-এ নিয়ে যাওয়া হয়। সূত্র অনুসারে বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা পরে রাজ্যপাল লক্ষণ প্রসাদ আচার্য এবং মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং-এর সঙ্গে দেখা করে।
ছাত্রদের অভিযোগ, ডিজিপি এবং কেন্দ্রের নিরাপত্তা উপদেষ্টা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছেন। সেই কারণে তাদের অপসারণ চাই। কুকিরা যখন মেইতেইদের ওপর হামলা চালিয়েছে সেই সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে।
এদিনই মণিপুর পুলিশের আইজি আই কে মুইভা সাংবাদিকদের জানান, গত ১ সেপ্টেম্বর কুকি জঙ্গীরা ড্রোন ব্যবহার করে ইম্ফল পশ্চিম জেলায় যে হামলা চালিয়েছে সেই ঘটনার তদন্তভার এনআইএ-কে দেওয়া হচ্ছে। ওই ঘটনার পর থেকে এখনও পর্যন্ত ইম্ফল পশ্চিম, বিষ্ণুপুর এবং জিরিবাম জেলায় সংঘর্ষে কমপক্ষে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার ছাত্রদের বিক্ষোভ মিছিলের আগেই রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পক্ষ থেকে মোবাইল পরিষেবা এবং ইন্টারনেট ব্রডব্যান্ড পরিষেবা আগামী পাঁচ দিনের জন্য বন্ধ করার কথা ঘোষণা করা হয়। ইম্ফল পশ্চিম ও পূর্ব এবং থৌবাল জেলায় কার্ফু জারি করা হয়। যে পাঁচ জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করার কথা জানানো হয়েছে তার মধ্যে আছে মেইতেই অধ্যুষিত ইম্ফল পূর্ব, ইম্ফল পশ্চিম, থৌবাল, চূড়াচন্দ্রপুর এবং কাকচিং।
অন্যদিকে কাংকোকপিতে কুকি-জো বিক্ষোভকারীরাও এদিন রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখায়। তাঁরা উপদ্রুত অঞ্চল থেকে প্রস্তাবিত আসাম রাইফেলস ব্যাটেলিয়ন প্রত্যাহারের বিরোধিতা করে। তাদের মতে এর ফলে এই অঞ্চলে হিংসা আরও বাড়বে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন