আজ বিকেল ৫টার মধ্যে মুক্তি দিতে হবে মণিপুরের সমাজকর্মী এরেন্দ্র লিচোমবামকে। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত মে মাসে গোবর প্রসঙ্গে করা এক ফেসবুক পোষ্টের জেরে সমাজকর্মী এরেন্দ্র লিচোমবামকে জাতীয় সুরক্ষা আইনে গ্রেপ্তার করা হয়েছিলো।
এদিন শীর্ষ আদালতে বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি এম আর শাহর বেঞ্চ তাঁকে ১০০০ টাকার বন্ডের বিনিময়ে বিকেল ৫টার মধ্যে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে এরেন্দ্র লিচোমবামের গ্রেপ্তারির প্রতিবাদ জানিয়ে এক আবেদন করেছিলেন তাঁর বাবা এল রঘুমণি সিং। যেখানে তিনি দাবি করেন যে এই ঘটনার সঙ্গে জাতীয় সুরক্ষা আইনের কোনো সম্পর্ক নেই।
এদিন শীর্ষ আদালত এরেন্দ্র লিচোমবামের মুক্তির নির্দেশ দিতে গিয়ে জানিয়েছে, এক নির্দোষ উক্তির জন্য মিঃ এরেন্দ্র ৪৫ দিনের বেশি কারাগারে কাটিয়েছেন। আবেদনকারীর পক্ষে আদালতে জানানো হয়, এই ঘটনা আইন অবমাননার এক প্রকৃষ্ট উদাহরণ। যেখানে রাজনৈতিক কন্ঠরোধ করার জন্য রাজ্যের শাসকদল এনএসএ ব্যবহার করেছে। কারণ কোনো কারণ ছাড়াই মণিপুরের শাসক দল চায় না তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলুক।
গত ১৭ মে এরেন্দ্র মণিপুরের স্থানীয় আদালত থেকে জামিন পেলেও ইম্ফল পশ্চিম জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তাঁকে ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট, ১৯৮০ তে আটক করার নির্দেশ দেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ মে রাজ্য বিজেপি সভাপতি অধ্যাপক সাইখোম টিকেন্দ্র সিং-এর মৃত্যুর পর সমাজকর্মী এরেন্দ্র তাঁর ফেসবুক পোষ্টে লেখেন – 'গোবর এবং গোমূত্রে করোনা সারেনা। করোনা সারে বিজ্ঞানে এবং সাধারণ জ্ঞানে। প্রফেসরজীর আত্মা শান্তি লাভ করুক।' এরেন্দ্রর এই ফেসবুক পোষ্টের পরেই তাঁর বিরুদ্ধে দুই বিজেপি নেতা মামলা করেন। এরপরেই তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয় এবং গ্রেপ্তার হন এরেন্দ্র লিচোমবাম। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন রাজ্য বিজেপি সাধারণ সম্পাদক পি প্রেমানন্দ মিটি এবং বিজেপি সহ সভাপতি উষম দেবাং।
এরেন্দ্র লিচোমবামকে এর আগে ২০১৮ সালে ফেসবুকে বিজেপির সমালোচনা করার জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছিলো। ২০২০ সালে নিজের ফেসবুক পেজে এক মন্তব্য করার জন্যও তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিলো।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন