লোকসভায় মণিপুরের ঘটনা প্রসঙ্গে বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবের আলোচনার মাঝেই রাজ্য সরকারের পদক্ষেপের দাবিতে এবার পথে নামলেন মণিপুরের মহিলারা। বুধবার ইম্ফল জেলার বিভিন্ন জায়গায় হাতে টর্চ ও মোমবাতি নিয়ে মিছিল করলেন শয়ে শয়ে মহিলারা। রাজ্য বিধানসভায় একটি জরুরি অধিবেশনের দাবিতেই সরব হয়েছেন তারা। এদিন রাত ৯.৩০ নাগাদ পশ্চিম ইম্ফলের কেইসাম্পাত, কেইসামথং, কওয়াকেইথেল এবং পূর্ব ইম্ফলের ওয়াংখেই, কোংবা এলাকায় মোমবাতি মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল।
ওয়াংখেই অঞ্চলের মিছিলে অংশগ্রহণকারী ইনগুদাম ববিতা এদিন সাংবাদিকদের জানান, “আমরা মণিপুর বিধানসভায় আলাদা একটি অধিবেশনের আবেদন জানাচ্ছি। বিধানসভায় সরকার এই রাজ্যের আঞ্চলিক অখণ্ডতা বজায় রাখার জন্য একটি প্রস্তাব পাশ করিয়ে সেটাকে বাদল অধিবেশন শেষ হওয়ার আগে সংসদে পাঠাক।” পাশাপাশি তিনি মিছিলে হাঁটতে হাঁটতে কুকি সম্প্রদায়ের জন্য একটি আলাদা প্রশাসন এবং রাজ্যের বেআইনি অভিবাসীদের চিহ্নিত করার জন্য এনআরসি প্রয়োগ করার দাবি জানিয়ে স্লোগানও তোলেন।
প্রসঙ্গত, মণিপুর বিধানসভায় শেষবার অধিবেশন বসেছিল গত মার্চ মাসে এবং রাজ্যে হিংসার সূত্রপাত হয় গত ৩ মে। অর্থাৎ রাজ্যের সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়িয়ে পড়ার পর বিধানসভার কোনও অধিবেশন বসেনি।
গত সপ্তাহেই রাজ্যের মন্ত্রিসভার তরফে রাজ্যপাল অনুসূইয়া উইকেইকে আগামী ২১ আগস্ট থেকে বিধানসভায় একটি অধিবেশন পরিচালনা শুরু করার অনুরোধ জানানো হয়। অন্যদিকে, বিধানসভায় অধিবেশনের দাবিতে গত শনিবার মেইতেই গোষ্ঠীর সংগঠনের তরফে রাজ্য জুড়ে একটি ২৪ ঘণ্টা বনধেরও ডাক দেওয়া হয়।
ইম্ফলের একাধিক সমাজসেবী সংগঠনের শীর্ষ সংগঠন ‘দ্য কোঅরডিনেটিং কমিটি অন মণিপুর ইন্টিগ্রিটি (COCOMI)-এর তরফে গত ৬ আগস্ট রাজ্যের অশান্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার জন্য বীরেন সিংহের বিজেপি সরকারকে বয়কট করার ডাক দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত মে মাসের শুরু থেকেই সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনায় জ্বলছে উত্তর-পূর্ব ভারতের এই রাজ্য। এখনও পর্যন্ত সরকারি হিসেবে ১৬০ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। ওয়াকিবহাল মহলের মতে সংখ্যাটা আরও অনেকটাই বেশি। মণিপুরের লাগাতার হিংসায় আহত হয়েছেন কয়েকশো মানুষ। বহু ঘরবাড়ি লুঠপাট, জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন